“হোয়াইট লোটাস” প্রভাব: পর্যটকদের ভিড় এড়িয়ে, থাইল্যান্ড ভ্রমণে নতুন দিগন্ত।
বর্তমানে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে, যা অনেক সময় পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি, জনপ্রিয় টিভি সিরিজ “হোয়াইট লোটাস”-এর কারণে থাইল্যান্ডে পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
এই সিরিজের দৃশ্যায়ন হওয়ার ফলে, কোহ সামুই-এর মতো জনপ্রিয় স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পর্যটকের আগমন ঘটছে, যা সেখানকার পরিবেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, এখনো থাইল্যান্ডে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে পর্যটকদের কোলাহল নেই, এবং প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যেতে পারে।
আসুন, তেমন কয়েকটি জায়গার সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক।
১. কোহ ফায়াম: নির্জন দ্বীপের স্বাদ
যারা কোলাহলমুক্ত সমুদ্র ভালোবাসেন, তাদের জন্য কোহ ফায়াম একটি আদর্শ স্থান হতে পারে। এখানকার শান্ত সমুদ্র সৈকত, নীল জলরাশি এবং সবুজের সমারোহ যেকোনো পর্যটকের মন জয় করে।
কোনো প্রকার গাড়ির চলাচল না থাকায়, এখানকার পরিবেশ বেশ শান্ত ও দূষণমুক্ত। এখানে আপনি সাধারণ মানের হোটেলে থাকতে পারবেন, স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে উপভোগ করতে পারবেন বিভিন্ন প্রকারের সুস্বাদু খাবার।
যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই স্থানটি একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে।
২. নান: থাই সংস্কৃতির গভীরে
পর্যটকদের মধ্যে সাধারণত চিয়াং মাই এবং চিয়াং রাই-এর মতো স্থানগুলো থাই সংস্কৃতির জন্য বেশি পরিচিত। তবে, আপনি যদি শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে থাই সংস্কৃতি উপভোগ করতে চান, তাহলে নান আপনার জন্য একটি উপযুক্ত গন্তব্য হতে পারে।
ব্যাংকক থেকে মাত্র এক ঘণ্টার বিমান ভ্রমণ করে এখানে যাওয়া যায়। এখানকার পাহাড়বেষ্টিত দৃশ্য যেকোনো পর্যটকের মন মুগ্ধ করে।
ওয়াট ফরা থাত খাও নই-এর মতো মন্দিরগুলোতে গেলে আপনি থাই সংস্কৃতির গভীরতা অনুভব করতে পারবেন। এখানকার স্থানীয় বাজারগুলোতে traditional খাবার ও হস্তশিল্পের দেখা পাওয়া যায়।
৩. খাও sok: প্রকৃতির কোলে
যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য খাও sok একটি অসাধারণ স্থান। এখানে চেও লান লেকের তীরে অবস্থিত ভাসমান কটেজে থাকার সুযোগ রয়েছে, যা আপনাকে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সাক্ষী করবে।
এখানকার জঙ্গলে ট্রেকিং, লেকের চারপাশে নৌবিহার এবং বন্যজীবন উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই স্থানটি একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে।
৪. ব্যাংককের সবুজ ফুসফুস: ব্যাংক ক্রাচাও
ব্যাংকক শহরের কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির শান্ত পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে চাইলে ব্যাংক ক্রাচাও আপনার জন্য একটি আদর্শ স্থান হতে পারে। এটিকে ব্যাংককের “সবুজ ফুসফুস” হিসাবেও অভিহিত করা হয়।
এখানে কোনো গাড়ির চলাচল নেই, তাই এখানকার পরিবেশ বেশ শান্ত ও দূষণমুক্ত। আপনি স্কাইট্রেনে করে ব্যাংক না-তে গিয়ে, সেখান থেকে নৌকায় চড়ে এই স্থানে যেতে পারেন।
এখানে সাইকেল ভাড়া করে দ্বীপের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা দিতে পারে। এখানকার স্থানীয় বাজার থেকে traditional খাবার ও হস্তশিল্প সংগ্রহ করতে পারেন।
অতএব, থাইল্যান্ড ভ্রমণে শুধুমাত্র জনপ্রিয় স্থানগুলোর বাইরেও আরও অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে, যা আপনার ভ্রমণকে আরও আনন্দ-দায়ক করে তুলবে। তাই,পরবর্তী থাইল্যান্ড ভ্রমণে, এই স্থানগুলো ঘুরে আসার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান