টিভি পর্দায় এক অদ্ভুতুড়ে জগৎ তৈরি করেছেন নাথান ফিল্ডার। তাঁর নতুন শো ‘দ্য রিহার্সাল’ যেন এক ভিন্ন স্বাদের পরীক্ষা।
এখানে বাস্তবতাকে নতুন করে সাজানো হয়, মানুষকে তৈরি করা হয় কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য। এই শো-এর দ্বিতীয় সিজনে রয়েছে সম্পর্কের জটিলতা, গানের প্রতিযোগিতা, এমনকি বিমানযাত্রার সুরক্ষার মতো বিষয়।
‘দ্য রিহার্সাল’-এর মূল ধারণা হলো, বাস্তব জীবনের কঠিন পরিস্থিতিগুলোর জন্য মানুষকে প্রস্তুত করা।
ফিল্ডার, তাঁর বিশেষ কায়দায়, এই প্রস্তুতি পর্বের জন্য তৈরি করেন অসাধারণ সব দৃশ্য। যেমন, একজন বিমানচালককে সাহায্য করার জন্য, তাঁর প্রথম ডেটিংয়ের সময়, ২০ জন অভিনেতা তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ নকল করেন।
কখনো বা দর্শকদের দেখা মেলে, ব্রুকলিনের একটি বারের হুবহু প্রতিরূপ, যা তৈরি করা হয়েছে একটি বিমানবন্দরের ভেতরে। এমনকি, ক্যাপ্টেন ‘সুলি’ সলেনবার্গারের জীবন থেকে শিক্ষা নিতে, ফিল্ডার নিজেও এক অভিনব রূপে অবতীর্ণ হন।
এই শো-এর কাহিনীর গভীরে প্রবেশ করলে দেখা যায়, মানুষের ভাবনা, আচরণ এবং অপ্রত্যাশিত সামাজিক প্রতিক্রিয়ার এক জটিল চিত্র।
সমালোচকেরা বলেন, এই ধরনের কমেডি কিছুটা দুর্বোধ্য এবং অনেক সময় হতাশাজনকও হতে পারে। তবে, যারা ফিল্ডারের কাজের সঙ্গে পরিচিত, তাঁরা জানেন, এটি নিছক বিনোদন নয়, বরং মানুষের মনস্তত্ত্ব নিয়ে গভীর আলোচনা।
প্রথম সিজনের সাফল্যের পর, দ্বিতীয় সিজনে ফিল্ডার তাঁর পরীক্ষামূলক ধারণাগুলোকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে এসেছেন।
এখানে তিনি বাস্তবতার স্বরূপ উন্মোচন করেন এবং টেলিভিশন নির্মাণের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর প্রধান লক্ষ্য, বিমানযাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা।
পাইলটদের মধ্যে যোগাযোগের দুর্বলতা এবং তার ফলস্বরূপ বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করাই ছিল তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য।
শো-এর একটি পর্বে, ফিল্ডার একজন কো-পাইলটকে সাহায্য করেন তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে।
এখানেও তিনি অভিনেতাদের ব্যবহার করেন, যারা কো-পাইলটের প্রতিটি কথা ও কাজ অনুসরণ করেন। যদিও এই ধরনের অভিনব পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, কেউ কেউ একে মানসিক প্রতারণা বলেও মনে করেন।
তবে, ফিল্ডারের কাজ দর্শকদের নতুন কিছু ভাবতে বাধ্য করে, যা সম্ভবত এই শো-এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।
‘দ্য রিহার্সাল’ -এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল, এটি দর্শকদের বাস্তবতা এবং অভিনয়ের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুন করে বুঝতে সাহায্য করে।
এই শো-টি আমাদের দেখায়, জীবনের অনেক কিছুই আসলে পূর্ব-পরিকল্পিত নয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান