টমাস টুখেল: একনিষ্ঠ, কঠোর পরিশ্রমী, শৃঙ্খলাবদ্ধ…বিজয়ী!

নতুন ইংল্যান্ড কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন থমাস টুখেল। জার্মান এই কোচের রয়েছে খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সর্বোচ্চটা বের করে আনার এক অসাধারণ ক্ষমতা।

খেলার প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে তার গভীর মনোযোগ এবং খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কঠোর পরিশ্রম আদায়ের মানসিকতা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। টুখেলের কোচিং দর্শনে মুগ্ধ হয়েই তাকে নিয়োগ দিয়েছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।

খেলোয়াড়দের সম্পর্কে গভীর ধারণা রাখেন টুখেল। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড এবং চেলসিতে তার অধীনে খেলা পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “প্রশিক্ষণে তিনি খেয়াল করেন, কোন পায়ে বল কন্ট্রোল করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, টুখেল তার খেলোয়াড়দের প্রতিপক্ষের দুর্বলতা সম্পর্কেও অবগত করতে পছন্দ করেন। মাঠের প্রতিটি খেলোয়াড়ের দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে বলেন তিনি।

টুখেলের কোচিং ক্যারিয়ার সাফল্যের গল্পে পরিপূর্ণ। ২০২১ সালে চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করেছেন তিনি।

এর আগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড এবং প্যারিস সেন্ট জার্মেইর (পিএসজি) মতো ক্লাবের দায়িত্বও সামলেছেন। প্রতিটি ক্লাবে তার খেলোয়াড় নির্বাচনের ধরন ছিল বেশ আকর্ষণীয়। খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার।

তবে, মাঠের বাইরের জীবনে টুখেল কিছুটা ভিন্ন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পছন্দ করেন তিনি।

ড্রেসিংরুমে হাসিখুশি পরিবেশ তৈরি করতেও তার জুড়ি নেই। খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের মোটিভেশনাল ভিডিও এবং আলোচনার ব্যবস্থা করেন তিনি। খেলোয়াড়দের ভালো লাগা এবং খারাপ লাগা সম্পর্কে অবগত থাকেন সবসময়।

তবে, মাঠের খেলায় তিনি বেশ কঠোর। দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময় আপোষহীন তিনি।

খেলোয়াড়দের সামান্য ভুলও তিনি ভালোভাবে নেন না। খেলোয়াড়দের প্রতি তার এই কঠোর মনোভাব অনেক সময় সমালোচনার জন্ম দেয়। বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাবে তার এমন আচরণের কারণে অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল।

ইংল্যান্ড দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর টুখেলের সামনে এখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো। এই মুহূর্তে তার প্রধান লক্ষ্য দলটিকে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করা।

এফএ তাকে ১৮ মাসের একটি চুক্তি দিয়েছে। এই সময়ে তার কাজ হবে দলের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটানো। টুখেলের সহকারী হিসেবে কাজ করবেন অ্যান্থনি ব্যারি।

টুখেলের কোচিং স্টাইল এবং তার সাফল্যের ধারা বিবেচনা করে, ফুটবল বোদ্ধারা মনে করছেন, ইংল্যান্ড দল নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবে।

তবে, তার কঠোরতা এবং খেলোয়াড়দের ওপর অতিরিক্ত মনোযোগ অনেক সময় দলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *