যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, যেখানে প্রায় ১২ হাজার মুরগির বাচ্চাকে একটি ডাক বিভাগের ট্রাকে ফেলে যাওয়া হয়। খাবার ও পানির অভাবে কয়েক দিন আটকে থাকার পর এদের মধ্যে কয়েক হাজার বাচ্চা মারা যায়।
বর্তমানে সেখানকার একটি প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্র, ফার্স্ট স্টেট অ্যানিমেল সেন্টার ও এসপিসিএ (SPCA), কয়েক হাজার জীবিত বাচ্চাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
ঘটনাটি কিভাবে ঘটল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগ, ইউএসপিএস (USPS), ঘটনার তদন্ত করছে এবং তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে এমনটা ঘটেছে।
জানা গেছে, বাচ্চাগুলো ছিল ‘ফ্রিডম রেঞ্জার’ জাতের, যা একটি হ্যাচারি থেকে সরবরাহ করা হচ্ছিল।
যে হ্যাচারি থেকে বাচ্চাগুলো আসছিল, তারা এখন অসুস্থ বাচ্চার কারণে সেগুলোকে ফেরত নিতে পারছে না, কারণ তাদের জীব নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে।
হ্যাচারি কর্তৃপক্ষের মতে, ইউএসপিএস-এর উচিত ছিল বাচ্চাগুলোকে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া, যেখানে তাদের দেখাশোনার ব্যবস্থা ছিল।
ফার্স্ট স্টেট অ্যানিমেল সেন্টার ও এসপিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক জন পরানা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তারা জীবিত বাচ্চাগুলোর দেখাশোনা করছেন।
গত মঙ্গলবার থেকে তারা বাচ্চাগুলোকে দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কয়েক হাজারের মধ্যে মাত্র কয়েকশ’ বাচ্চাকে দত্তক নেওয়া হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে ছিল টার্কি, হাঁস এবং কোয়েল পাখির বাচ্চা।
আশ্রয়কেন্দ্রটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো অর্থের অভাব।
কর্মীদের অনেকেই নিজেদের পকেট থেকে টাকা খরচ করে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের কৃষি বিভাগ প্রাথমিকভাবে বাচ্চাগুলোর জন্য অর্থ সাহায্য করার কথা বললেও, পরে তারা তাদের সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
যদিও প্রতিটি বাচ্চার জন্য প্রতিদিন ৫ মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৫০ বাংলাদেশী টাকা) প্রদানের কথা ছিল, কিন্তু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, তাদের কাছে পর্যাপ্ত তহবিল নেই।
এই ঘটনার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রটি দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে এবং তাদের জনবলও বাড়াতে হয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ফ্রিডম রেঞ্জার জাতের মুরগিগুলো পূর্ণ বয়স্ক হতে প্রায় দশ সপ্তাহ সময় নেয় এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত স্থান ও খাদ্যের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন