মেক্সিকোর সিনােয়াতে কার্টেল সংঘর্ষ: জীবন বাঁচাতে পালাচ্ছে বাঘ, হাতি!

মেক্সিকোর সিনালোয়া রাজ্যে মাদক চক্রের দৌরাত্ম্যে সেখানকার বন্যপ্রাণীরা আজ চরম বিপদের সম্মুখীন। নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাঘ, জাগুয়ার এবং হাতির মতো বিভিন্ন প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, সেখানকার একটি অভয়াশ্রমে থাকা ৭০০-র বেশি পশুপাখির জীবন এখন গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে।

সিনালোয়ার রাজধানী শহরতলিতে ‘ওস্টোক অভয়াশ্রম’ নামে পরিচিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সার্কাস ও মাদক চক্রের সদস্যদের পোষা কিছু প্রাণী ছিল। কিন্তু গত বছর থেকে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী মাদক চক্রের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হওয়ায় পুরো অঞ্চলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এর ফলস্বরূপ, আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়, সেইসঙ্গে তাদের জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালক জানিয়েছেন, মাদক চক্রের এই সহিংসতা তাঁদের জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। গুলির শব্দ আর হেলিকপ্টারের আনাগোনা পশুপাখিদের মধ্যে তীব্র ভীতি তৈরি করে। অনেক সময় সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে কর্মীরা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারতেন না, ফলে পশুদের দিনের পর দিন খাবার জুটত না।

এর ফলে অনেক পশুর চামড়া ঝরে যেতে শুরু করে এবং এরই মধ্যে অন্তত দু’টি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।

পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায় যখন আশ্রয়কেন্দ্রে আহত একটি হাতির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ থেকেও পশুচিকিৎসকেরা সেখানে যেতে রাজি হননি। এমতাবস্থায়, কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা ছাড়াই সেখানকার পশুদের অন্য একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রায়ই তাঁদের পোষা প্রাণী হিসেবে বাঘ ও সিংহের মতো বন্য পশুদের ব্যবহার করে থাকেন। শোনা যায়, প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানোর জন্য বা শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এইসব পশুদের ব্যবহার করা হয়।

এমনকী, বন্দীদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, সেখানকার পশুদের জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে। মাদক চক্রের সহিংসতা এবং ক্ষমতার লড়াইয়ের কারণে বন্যপ্রাণী ও আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীদের জীবন আজ হুমকির মুখে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *