সংগীতের সুরে বাবার বাঁধন, টিকটকে মেয়ের অভিনব জয়!

শীর্ষক: টিকটকের মাধ্যমে বাবার সাথে নাচের ছন্দ, গ্র্যাজুয়েট স্কুলের খরচও যোগান তরুণীর

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

এই মাধ্যমগুলোর মধ্যে টিকটক (TikTok) একটি অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মানুষ তাদের প্রতিভার প্রকাশ করে থাকে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ রাজ্যের সারাতোগা স্প্রিংসের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী এলিশেভা হোয়াইট (Elisheva White) টিকটকের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন।

তিনি তার শ্রবণ-প্রতিবন্ধী বাবার সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এবং নিজের গ্র্যাজুয়েট স্কুলের খরচ যোগাতে এই প্ল্যাটফর্মটিকে ব্যবহার করছেন।

এলিশেভা আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ (American Sign Language – ASL) ব্যবহার করে জনপ্রিয় গানগুলোর অনুবাদ করেন এবং সেগুলোর ভিডিও তৈরি করেন।

তার এই অভিনব উদ্যোগটি একদিকে যেমন তার বাবার সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করেছে, তেমনিভাবে শ্রবণ-প্রতিবন্ধী সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এলিশেভা জানান, তিনি সবসময়ই চেয়েছেন তার বাবার সাথে সঙ্গীতের আনন্দ ভাগ করে নিতে, যা তিনি সাধারণ উপায়ে পারতেন না।

ছোটবেলা থেকেই এলিশেভার পরিবারে ASL-এর ব্যবহার ছিল স্বাভাবিক।

কারণ তার বাবা ছিলেন শ্রবণ-প্রতিবন্ধী।

বিয়ের পর আলাদা হয়ে গেলেও, তিনি ASL চর্চা চালিয়ে যান।

এলিশেভার মতে, টিকটকে ASL-এর মাধ্যমে গান পরিবেশন করাটা তার জন্য ASL-এর সাথে যুক্ত থাকার একটি দারুণ উপায়।

২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে এলিশেভা টিকটকে ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেন।

শুরুতে তিনি এতটা জনপ্রিয় হবেন, তা হয়তো ভাবেননি।

তবে, গ্র্যাজুয়েট স্কুলের খরচ যোগানোর জন্য তিনি একটি উপায় খুঁজছিলেন।

বর্তমানে তিনি বিবাহ ও পরিবার বিষয়ক থেরাপি নিয়ে পড়াশোনা করছেন।

একইসাথে, পড়াশোনার খরচ যোগাতে তিনি তিনটি কাজ করেন।

এলিশেভা জানিয়েছেন, টিকটক থেকে তিনি প্রায় ১,৩০০ ডলার (বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ১,৪২,০০০ টাকার কাছাকাছি) আয় করেছেন।

তবে, এলিশেভার মূল লক্ষ্য শুধু অর্থ উপার্জন করা নয়।

তিনি বলেন, “আমি ASL-এর মাধ্যমে গানগুলো পরিবেশন করি, কারণ আমি আমার বাবাকে সঙ্গীতের প্রতি আমার ভালোবাসার কথা জানাতে চাই।”

এলিশেভার মতে, তিনি তার বাবার জন্য সঙ্গীতের আনন্দ আরও সহজলভ্য করতে চান।

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এলিশেভা আরও জানান, তিনি চান অন্যদের কাছেও তাদের ভেতরের বিশেষত্ব তুলে ধরতে, যা তাদের অন্যদের থেকে আলাদা করে।

তিনি মনে করেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু বিশেষত্ব থাকে, যা সবার সাথে শেয়ার করা উচিত।

এলিশেভার এই গল্পটি নিঃসন্দেহে আমাদের সমাজে পরিবার, শিক্ষা এবং ভালোবাসার গুরুত্বের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *