মৃত্যুকেও হারিয়ে অভিনেতা স্প্যালের নতুন চমক!

টিমথি স্প্যাল: অভিনয়ের জগৎ থেকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই, সাফল্যের গল্প
খ্যাতিমান ব্রিটিশ অভিনেতা টিমথি স্প্যালের জীবন যেন এক বর্ণময় ক্যানভাস।

অভিনয়ের দুনিয়ায় তাঁর বিচরণ বহু বছরের, যেখানে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অজস্র চরিত্র। সম্প্রতি বিবিসি-র নতুন ক্রাইম ড্রামা ‘ডেথ ভ্যালি’-তে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছে।

অভিনয়ের বাইরে ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন এক লড়াই লড়েছেন তিনি, আর সেই গল্পও যেন তাঁর সাফল্যের মতোই অনুপ্রেরণাদায়ক।

লন্ডনের রাস্তায় এক কফি শপে বসে আলাপচারিতায় অভিনেতা জানান, নতুন এই সিরিজে তিনি জন চ্যাপেল নামের এক অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করছেন, যিনি একসময় টেলিভিশনের জনপ্রিয় গোয়েন্দা ছিলেন।

গল্পের মোড় নেয় যখন এই অভিনেতা, যিনি একসময় খ্যাতির শীর্ষে ছিলেন, একটি খুনের ঘটনার তদন্তে জড়িয়ে পড়েন।

চরিত্রটি নির্বাচন প্রসঙ্গে স্প্যাল বলেন, “আমি এমন একটা চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলাম যা অভিনেতাদের ভণ্ডামি এবং আন্তরিকতা উভয় দিকই তুলে ধরবে।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে স্প্যাল বহু চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। হ্যারি পটার সিনেমায় তিনি যেমন ছিলেন খল অভিনেতা, তেমনি ‘সিক্রেট্‌স অ্যান্ড লাইজ’ ছবিতে এক সাধারণ মানুষের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন।

মাইক লেই-এর পরিচালনায় ‘মি. টার্নার’ ছবিতে জেমস ম্যালর্ড উইলিয়াম টার্নারের চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও দর্শক হৃদয়ে গেঁথে আছে।

এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন।

অভিনয়ের বাইরে স্প্যালের জীবনটাও কম বর্ণময় নয়। ক্যান্সারকে জয় করে ফিরে আসা তাঁর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

এই কঠিন সময়ে তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধব। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন জীবন কত মূল্যবান।

তাই দর্শকদের জন্য ভালো কাজ করার বিষয়ে তিনি সবসময়ই সচেতন ছিলেন। তিনি মনে করেন, “একজন অভিনেতা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দেওয়া।

নিজের অভিনয় জীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্প্যাল পুরনো একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মি. টার্নার’ ছবির প্রিমিয়ারের সময়, একজন দর্শক তাঁকে ‘ব্যারি’ নামে ডাকেন।

ব্যারি আসলে তাঁর অভিনীত একটি জনপ্রিয় চরিত্রের নাম, যা ১৯৮০-এর দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এই ঘটনা থেকে তিনি অনুধাবন করেন, খ্যাতি মানুষকে কত সহজে মাটির কাছাকাছি নিয়ে আসে।

টিমথি স্প্যালের অভিনয় জীবন, তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং দর্শকদের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার—সবকিছুই যেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা, কঠিন পরিস্থিতিতেও হার না মানা মানসিকতা, আর দর্শকদের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা—এসবই তাঁকে একজন পরিপূর্ণ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *