আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ডুবোযান টাইটানের ভয়াবহ বিস্ফোরণের মুহূর্তের একটি অডিও সম্প্রতি প্রকাশ করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড। এই শব্দ রেকর্ড করা হয়েছিল সাপোর্ট জাহাজ ‘পোলার প্রিন্স’-এ, যেখানে ছিলেন ওশানগেটের সিইও স্টকটন রাশের স্ত্রী ওয়েন্ডি রাশ এবং যোগাযোগ ও ট্র্যাকিং দলের সদস্য গ্যারি ফস।
২০২৩ সালের ১৮ই জুন তারিখে, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। প্রকাশিত ক্লিপটিতে শোনা যায়, ওয়েন্ডি রাশ একটি শব্দ শুনে সাথে সাথেই প্রশ্ন করেন, “ওটা কি শব্দ?”
জানা যায়, ডুবোযানটি যখন সমুদ্রের প্রায় ৩,৩০০ মিটার গভীরে ছিল, তখনই এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ওয়েন্ডি ডুবোযান থেকে আসা কিছু বার্তা পাচ্ছিলেন, যেখানে ওজন কমানোর কথা বলা হয়েছিল। এর কিছু পরেই ডুবোযানের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কোস্টগার্ডের ধারণা, বিস্ফোরণের শব্দ জাহাজে পৌঁছাতে যে সময় লেগেছিল, তার চেয়ে বেশি সময় লেগেছিল বার্তাগুলো সাপোর্ট জাহাজে আসতে।
এই দুর্ঘটনায় ওশানগেটের সিইও স্টকটন রাশ সহ মোট পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং, পল-হেনরি নারজিওলেট এবং শাহজাদা ও সুলেমান দাউদ নামের বাবা ও ছেলে।
মার্কিন কোস্টগার্ডের মেরিন বোর্ড অফ ইনভেস্টিগেশন এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে এবং তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এই বছরের শেষে প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, ডুবোযানের মূল কাঠামো, যা যাত্রী বসার স্থান ছিল, তা কার্বন ফাইবার এবং রেজিনের স্তর দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গভীর সমুদ্রের চাপে কার্বন ফাইবারের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভবত এই কাঠামোর দুর্বলতার কারণেই ডুবোযানটি বিস্ফোরিত হয়েছিল।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ওশানগেটের প্রাক্তন কন্ট্রাক্টর টিম ক্যাটারসন, তদন্ত বোর্ডের কাছে সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, তার ধারণা, বিস্ফোরণটি এতটাই দ্রুত হয়েছিল যে, ভেতরের যাত্রীরা সম্ভবত কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ হয়ে যায়।
ক্যাটারসন আরও জানান, সম্ভবত তারা টাইটানিক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন, যখন এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে।
তথ্য সূত্র: পিপল