মার্কিন টিভি তারকাদের ক্ষমা, জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর ট্রাম্পের পদক্ষেপ।
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘ক্রিসলি নোস বেস্ট’-এর তারকা যুগল, টড এবং জুলি ক্রিসলি, অবশেষে তাদের কারাবাস থেকে মুক্তি পেলেন। ২০১৬ সালে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের ক্ষমা করে দেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পেছনে ছিলেন তাদের কন্যা সাভানা ক্রিসলি এবং ক্যাসেশন সংস্কারের পক্ষে কাজ করা অ্যালিস জনসন।
২০২২ সালে টড ক্রিসলিকে ১২ বছরের এবং জুলি ক্রিসলিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা ব্যাংকগুলোকে প্রতারিত করে অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছিলেন এবং কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর থেকেই তাদের মুক্তির জন্য সাভানা ক্রিসলি ও অ্যালিস জনসন নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যান।
সাভানা তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ‘আনলকড’ নামে একটি পডকাস্টের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে বাবা-মায়ের মামলাটি নিয়ে আলোচনা করতেন এবং তাদের মুক্তির জন্য জনমত তৈরি করেন। এমনকি তিনি ট্রাম্পের কাছে সরাসরি ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনও জানান।
অন্যদিকে, অ্যালিস জনসন, যিনি নিজেও পূর্বে ট্রাম্পের ক্ষমা লাভ করেছিলেন, এই মিশনে সাভানাকে সমর্থন করেন। জানা যায়, জনসনকে ট্রাম্প তার ‘ক্ষমা বিষয়ক উপদেষ্টা’ হিসেবেও উল্লেখ করতেন।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে সাভানা ক্রিসলি তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, “আজ সকালে আমি একটি ফোন কল পাই, যেখানে আমাকে জানানো হয় যে আমার বাবা-মাকে ক্ষমা করা হয়েছে। আমি আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম।”
ক্ষমা ঘোষণার সময়, ট্রাম্পের উপদেষ্টা মার্গো মার্টিন সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প সাভানার সাথে কথা বলছেন এবং জনসন মৃদু হাসিমুখে তাদের কথা শুনছেন।
টড এবং জুলি ক্রিসলি ১৯৯৬ সাল থেকে বিবাহিত। তাদের পরিবারের জীবন নিয়ে নির্মিত রিয়েলিটি শো ‘ক্রিসলি নোস বেস্ট’ ২০১৪ সালে প্রথম প্রচারিত হয় এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। তারা তাদের পরিবারের জীবনযাত্রা, যা জর্জিয়া ও টেনেসির বাড়িতে অতিবাহিত হত, তা দর্শকদের সামনে তুলে ধরতেন।
ক্ষমা পাওয়ার পরেও, সাভানা ক্রিসলি বিচার বিভাগের সংস্কারের জন্য তার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমার বাবা-মা বাড়ি ফিরে আসার পরেও, আমি তাদের জন্য এবং যারা নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারে না, তাদের জন্য ন্যায়বিচারের লড়াই চালিয়ে যাব।”
এই ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি একদিকে যেমন একজন প্রভাবশালী পরিবারের আইনি জটিলতা এবং তাদের মুক্তির জন্য চালানো প্রচেষ্টার গল্প, তেমনিভাবে ক্ষমা প্রদর্শনের রাজনৈতিক তাৎপর্যও তুলে ধরে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন