অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, বিরল এক রোগে আক্রান্ত ছোট্ট শিশু জ্যাকসন, চিকিৎসকদের সব ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে এখন ভালোবাসে একটি আমেরিকান ডাইনার-স্টাইলের রেস্টুরেন্ট-এর খাবার।
খাদ্যগ্রহণে অক্ষমতা থেকে মুক্তি পেতে চলেছে সে, আর তার এই পথচলার সাক্ষী এখন ‘ওয়াফল হাউস’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট।
জ্যাকসনের মা ক্যাটলিন স্কারা জানিয়েছেন, জন্মের পরই তারা জানতে পারেন জ্যাকসনের ‘নেমালিন মায়োপ্যাথি’ নামক একটি বিরল রোগ রয়েছে।
এই রোগে শরীরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং খাদ্যনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে, এতদিন পর্যন্ত জ্যাকসনকে একটি টিউবের মাধ্যমে খাবার দিতে হত।
কিন্তু সম্প্রতি, এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।
ক্যাটলিন জানান, তারা ৭ মাস আগে টেনেসির ন্যাশভিলে বসবাস শুরু করেন।
স্বামীর জন্মদিন উপলক্ষে তারা সকলে মিলে গিয়েছিলেন ওয়াফল হাউসে।
সেখানে ওয়াফল খাওয়ার পরেই জ্যাকসন এর প্রেমে পড়ে যায়।
প্রথমে তারা বাড়িতে এগো ওয়াফল খাওয়াতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেটি তার জন্য শক্ত ছিল।
ওয়াফলের স্বাদ ভালো লাগায়, ওয়াফল হাউস-এ যাওয়ার পরেই সেটির আবদার করে বসে সে।
চিকিৎসকেরা একসময় জ্যাকসনের বেশি দিন বাঁচার সম্ভাবনা দেখেননি।
তারা বলেছিলেন, হয়তো বড়জোর আর তিন মাস বাঁচবে সে।
কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে, শুধু ভালোই নেই, বরং এখন সে স্বাভাবিক জীবন যাপনের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে।
ওয়াফল হাউস-এ যাওয়া এখন জ্যাকসনের কাছে একটি আনন্দের বিষয়।
ক্যাটলিন আরও জানান, জ্যাকসন এখন দিনে চারবার টিউবের মাধ্যমে খাবার গ্রহণ করে।
তবে খাবারের মাঝে বা খাওয়ার সময় অন্য কোনো খাবার খেতে চাইলে, তাকে সেই খাবারটি দেওয়া হয়।
ওয়াফল হাউস-এর ওয়াফল তার অন্যতম পছন্দের খাবার।
মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠেও সে ওয়াফল খাওয়ার বায়না ধরে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ক্যাটলিন, জ্যাকসনের জীবনযাত্রা নিয়ে বিভিন্ন ভিডিও শেয়ার করেন।
ওয়াফল হাউসে যাওয়ার ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ১ কোটি ৭৭ লক্ষ মানুষ সেটি দেখেছে।
ক্যাটলিন বলেন, “অনেকে মনে করেন, জ্যাকসন শুধু ওয়াফল খেতে চাইছে, বিষয়টি তেমন।
আবার অনেকে, তার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে সহানুভূতি দেখাচ্ছে।”
জ্যাকসনের মা আরও জানান, তিনি অন্যান্য বাবা-মায়েদের সঙ্গেও কথা বলেন, যাদের শিশুদের একই ধরনের সমস্যা রয়েছে।
তাদের প্রতি তিনি পরামর্শ দেন, শিশুদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে এবং তাদের খাবারের প্রতি জোর না করতে।
ওয়াফল হাউসে যাওয়া এবং জ্যাকসনকে ওয়াফল খেতে দেখা, স্কারা পরিবারের জন্য একটি বিশাল মাইলফলক।
ক্যাটলিন মনে করেন, একদিন হয়তো জ্যাকসনকে এই টিউবের ওপর নির্ভর করতে হবে না।
ক্যাটলিন জানান, “কয়েক মাস আগেও আমি ভাবিনি যে, সে মুখ দিয়ে খাবার খেতে পারবে।
এখন সে অল্প অল্প করে খাচ্ছে, যা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।”
তথ্য সূত্র: পিপল