খ্যাতিমান শেফ টম কেরিডজ-এর মুখ থেকে ব্রিটেনের পাব ও রেস্তোরাঁ ব্যবসার সংকট এবং সাফল্যের গল্প
ব্রিটিশ রন্ধনশিল্পের পরিচিত মুখ টম কেরিডজ। তাঁর মালিকানাধীন পাব এবং রেস্তোরাঁগুলি বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি ব্রিটেনের খাদ্য ব্যবসার বর্তমান পরিস্থিতি, নিজের জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন।
কেরিডজ-এর মতে, পাবগুলি শুধু খাবার পরিবেশনের স্থান নয়, বরং মানুষের একত্র হওয়ার জায়গা। গ্রাহকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো থেকে শুরু করে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা— সবই একটি পাবের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। তাঁর নিজের রেস্তোরাঁ ‘হ্যান্ড অ্যান্ড ফ্লাওয়ার্স’-এর দুটি মিশেলিন স্টার রয়েছে, যা এই খ্যাতিমান শেফের সাফল্যের অন্যতম প্রমাণ।
তবে, কেরিডজ-এর জীবন সবসময় মসৃণ ছিল না। একসময় অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তাঁর খ্যাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তিনি জানান, একসময় দিনে অন্তত ডজন খানেক বিয়ার এবং আরও অনেক পানীয় পান করতেন। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন যাপন করেন এবং খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে নিজেকে ফিট রেখেছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের পাব ও রেস্তোরাঁ ব্যবসা বেশ কঠিন সময় পার করছে। কেরিডজ জানান, তাঁর ৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩টি সামান্য লাভজনক, ২টি কোনোমতে টিকে আছে এবং ১টি লোকসান গুনছে। কর্মীদের জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি, ভ্যাট এবং অন্যান্য ট্যাক্স-এর বোঝা—এসব কারণে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রাজনৈতিক আলোচনায় কেরিডজ লেবার পার্টির সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসার উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তিনি ভ্যাট কমানোর এবং কর্মীদের জন্য উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তাঁর মতে, কর্মীদের ভালো রাখতে পারলে ব্যবসার উন্নতি সম্ভব।
কেরিডজ মনে করেন, মানুষের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। পাবগুলোতে মানুষের এই মিলনমেলা ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তিনি তাঁর কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাঁদের ভালো কাজের স্বীকৃতি দেন।
টম কেরিডজ-এর মতে, খাদ্য ব্যবসা একটি কঠিন পথ, তবে এখানে টিকে থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। তিনি তাঁর কর্মীদের উৎসাহিত করেন এবং তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, এই ব্যবসার ভবিষ্যৎ মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর নির্ভরশীল।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান