টরন্টোর সেরা রেস্টুরেন্ট: টপ শেফ বিচারকদের গোপন কথা!

টরন্টোর খাদ্য জগৎ: ‘টপ শেফ’-এর বিচারকদের চোখে দেখা

কানাডার বৃহত্তম শহর টরন্টো, যা তার সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। সম্প্রতি, জনপ্রিয় রান্নার অনুষ্ঠান ‘টপ শেফ’-এর ২২তম সিজনের শুটিং হয়েছে এখানে।

এই অনুষ্ঠানের বিচারকরা, বিশ্বখ্যাত শেফ ক্রিস্টেন কিস, টম কলিচিও এবং গেইল সিমন্স, টরন্টোর খাদ্য-অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তাদের মতামত দিয়েছেন, যা শহরটির রন্ধনসম্পদের এক উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে। আসুন, তাদের চোখে টরন্টোর সেরা কিছু খাবারের ঠিকানা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গেইল সিমন্সের চোখে টরন্টোর স্বাদ

টরন্টোর স্থানীয় গেইল সিমন্সের মতে, এই শহরের খাদ্য-বৈচিত্র্য সত্যিই অসাধারণ। এখানে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের বসবাস, যা শহরের খাদ্যভাণ্ডারেও ভিন্নতা এনেছে।

তিনি বিশেষ করে চারটি ‘চায়নাটাউন’, ক্যারিবিয়ান, শ্রীলঙ্কান এবং গ্রিক পাড়ার খাবারের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন। যারা টরন্টোর এই দিকটি উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য গেইলের পরামর্শ হল: ‘কাসা প্যাকো’-র স্প্যানিশ খাবার, ‘সানি’স চাইনিজ’-এর চাইনিজ এবং ‘ব্রডফ্লাওয়ার’ বেকারীর আকর্ষণীয় সব পদ চেখে দেখা।

এছাড়াও, তিনি কানাডার বিশেষ কিছু স্ন্যাকসের কথা উল্লেখ করেছেন, যেমন ‘জায়ান্ট সাওয়ার কিস’ এবং ‘কফি ক্রিস্প’ চকোলেট বার, যা স্থানীয় স্বাদের এক দারুণ উদাহরণ।

ক্রিস্টেন কিসের খাদ্য-অভিজ্ঞতা

অনুষ্ঠানের হোস্ট এবং দশম সিজনের বিজয়ী ক্রিস্টেন কিসও টরন্টোর খাবার নিয়ে বেশ উৎসাহী।

তার পছন্দের তালিকায় রয়েছে ‘আলোয়েট’-এর ‘আলোয়েট বার্গার’, ‘ফিশম্যান লবস্টার ক্লাবহাউস রেস্টুরেন্ট’-এর বিখ্যাত ‘লবস্টার টাওয়ার’ এবং ‘ড্যানি’স পিৎজা টেভার্ন’-এর পিৎজা।

টরন্টোর খাদ্য সংস্কৃতি আরও ভালোভাবে জানতে, তিনি স্থানীয় বাজার ও ওষুধের দোকানে ঢুঁ মারার পরামর্শ দেন, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কানাডিয়ান স্ন্যাকস পাওয়া যায়। যেমন, ‘কেচাপ ও অল-ড্রেসড চিপস’ এবং ‘মিস ভিকি’স চিপস’-এর নানা স্বাদের চিপস এখানকার অন্যতম জনপ্রিয় খাবার।

ডেজার্টের জন্য তিনি ‘ইয়র্কভিল’ এলাকার ‘সামার’স আইসক্রিম’-এর ক্যাম্পফায়ার মার্শম্যালো আইসক্রিমের স্বাদ নিতে বলেন। ক্রিস্টেন আরও উল্লেখ করেন, টরন্টোর খাদ্য ঐতিহ্যের গভীরে যেতে হলে এখানকার সুশি পিৎজা এবং হাওয়াইয়ান পিৎজার মতো খাবারের উৎস সম্পর্কেও ধারণা রাখা দরকার।

সবশেষে, তিনি এখানকার ‘জ্যামাইকান প্যাটিস’-এর মতো মাল্টিকালচারাল খাবার চেখে দেখার পরামর্শ দেন, যা টরন্টোর সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।

শেফ টম কলিচিওর রেস্টুরেন্ট-পর্যালোচনা

বিখ্যাত শেফ এবং রেস্টুরেন্ট মালিক টম কলিচিও-এর মতে, টরন্টোর সেরা ডাইনিং অভিজ্ঞতার জন্য বেছে নিতে পারেন ‘প্রাইম সীফুড প্যালেস’ এবং ‘আজহার’-এর মতো রেস্টুরেন্টগুলো।

‘আজহার’-এ তিনি পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের খাবারের স্বাদ উপভোগ করেছেন। যারা সাধারণ খাবারের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য টমের পরামর্শ হল ‘লঙ্গো’স মার্কেট’-এর মত ভালো মানের গ্রোসারিতে যাওয়া, যেখানে তাজা উপাদান দিয়ে সাধারণ অথচ সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায়।

এছাড়াও, তিনি ‘সেন্ট লরেন্স মার্কেট’-এর প্রশংসা করেন, যেখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়। এই বাজারের ১২০টির বেশি স্টলে নানান ধরনের বেকারি আইটেম, তাজা ফল ও সবজি, মাংস এবং সি-ফুড পাওয়া যায়।

উপসংহার

টরন্টোর খাদ্য-বৈচিত্র্য সত্যিই অসাধারণ। ‘টপ শেফ’-এর বিচারকদের এই সুপারিশগুলি শহরটির রন্ধন-ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়।

আপনিও কি আন্তর্জাতিক খাবারের স্বাদ নিতে ভালোবাসেন? তাহলে, আপনার আশেপাশেও এমন অনেক খাবারের দোকান থাকতে পারে, যেখানে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও স্বাদের ছোঁয়া রয়েছে।

তথ্য সূত্র: ট্র্যাভেল অ্যান্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *