বিস্ময়কর তোয়ামা: কাঠের কারুশিল্প গ্রাম, যেখানে বিড়াল আর শিল্প একসাথে!

জাপানের ইনামিতে কাঠের কারুশিল্পের জগৎ: বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি

জাপানের তোয়ামা জেলার ইনামি শহরটি যেন এক জীবন্ত শিল্পগ্রাম। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো কাঠের কারুকার্য। বহু বছর ধরে এই শহরের কারিগররা তাঁদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কাঠকে রূপ দেন নানা রূপে।

বাংলাদেশের মানুষের কাছেও কিন্তু এই ধরনের কারুশিল্পের কদর অনেক। আমাদের দেশেও একসময় নানা ধরনের কাঠের কাজ, যেমন- নকশা করা খাট, পালঙ্ক, দরজা, এমনকি বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র তৈরি হতো।

সময়ের সাথে সাথে হয়তো সেসবের চল কমেছে, কিন্তু মানুষের রুচি আর আগ্রহ এখনো একইরকম আছে।

ইনামী শহরের গল্পটা শুরু হয় ১৭০০ শতকে, যখন এখানকার কারিগররা কাঠের উপর খোদাই করা শুরু করেন। আজও, প্রায় আট হাজার মানুষের এই শহরে, প্রায় ১৫০ জন মানুষ এই শিল্পের সাথে জড়িত।

ইয়োকামাচি-দোরি হলো এই শহরের প্রধান রাস্তা, যেখানে আপনি কাঠমিস্ত্রিদের কর্মশালা দেখতে পারবেন। তাদের হাতের ছেনি আর বাটালির আওয়াজ, কাঠের সুগন্ধ, আর নানান ধরনের নকশা – সবই যেন এক মুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে।

ইনামীতে কাঠের কাজের ঐতিহ্য আজও ভালোভাবে টিকে আছে। এখানকার জুইসেন-জি মন্দিরটি জাপানের অন্যতম বৃহৎ কাঠের তৈরি মন্দির। এই মন্দিরের কারুকার্যগুলো দেখলে কারুশিল্পীদের দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

এছাড়া, ইনামি স্কাল্পচার জেনারেল হলে কাঠের তৈরি ২০০টির বেশি শিল্পকর্ম রয়েছে, যেখানে স্থানীয় শিল্পকলার নিদর্শন দেখা যায়।

আপনি যদি ইনামিতে কয়েকটা দিন কাটান, তাহলে এখানকার সংস্কৃতিকে আরও ভালোভাবে অনুভব করতে পারবেন। এখানে ‘বেড অ্যান্ড ক্রাফট’ নামের একটি হোটেল আছে, যেখানে স্থানীয় কারিগরদের তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের কক্ষে থাকার সুযোগ রয়েছে।

এই হোটেলে থাকার মাধ্যমে আপনি স্থানীয় কারুশিল্পীদের কাজকে সমর্থন করতে পারবেন। এছাড়াও, এখানে কাঠের চামচ বা বার্নিশ করা চপস্টিক তৈরির মতো অভিজ্ঞতাও নিতে পারেন।

এই শহর শুধু তার কারুশিল্পের জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এখানকার মানুষের আন্তরিকতাও অনেক। ইনামির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর কারুশিল্প – সব কিছুই যেন এক সুতোয় গাঁথা।

কাঠের কারুশিল্পের এই জগৎ, যা বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক মিল রাখে, তা আমাদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *