ট্রেনে প্রেম, ৬ ঘণ্টা পর মিলল ভালোবাসার মানুষ!

ভাগ্যচক্রে বাঁধা: ট্রেনের কামরায় আলাপ, আর তারপর ভালোবাসার বাঁধন

হঠাৎ করে কারও সঙ্গে আলাপ, আর সেই আলাপ যে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে, এমনটা হয়তো সবাই চায়। এমনই এক গল্প শোনানো যাক, যেখানে ট্রেন যাত্রার একঘণ্টা বদলে দিয়েছিল দুটি মানুষের জীবন।

২০০০ সালের এক সকালে, মায়েরে ক্লিফোর্ড নামের এক তরুণী, স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গের উদ্দেশ্যে লন্ডন থেকে একটি ট্রেনে যাত্রা করছিলেন। তাঁর প্রেমিকও ছিলেন সঙ্গে, যিনি সিটে বসেই ঘুমিয়ে পড়েন। মায়েরে জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিলেন, কিন্তু তাঁর ভালো লাগছিল না।

এরপর তিনি যান ট্রেনের ধূমপানের কামরায়।

সেখানে তাঁর আলাপ হয় অ্যান্ডি বেইন নামের এক যুবকের সঙ্গে। অ্যান্ডি সম্প্রতি তানজানিয়া ও জাঞ্জিবার থেকে ঘুরে ফিরেছিলেন। দুজনের মধ্যে হালকা কথোপকথন শুরু হয়।

মায়েরে প্রথম দর্শনেই অ্যান্ডির প্রতি আকৃষ্ট হন। তাঁদের মধ্যে যেন গভীর এক বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়।

ট্রেনযাত্রা শেষে দুজনেই তাঁদের পথে আলাদা হয়ে যান। কিন্তু এই সাক্ষাৎ যেন ছিল এক নতুন গল্পের শুরু।

কিছুদিন পর, মায়েরে অ্যান্ডিকে একটি ই-মেইল করেন। এরপর তাঁদের মধ্যে নিয়মিতভাবে ইমেইল চালাচালি হতে থাকে। ধীরে ধীরে বাড়ে তাঁদের কথোপকথন, যা একসময় ফোন কল পর্যন্ত গড়ায়।

এরপর একদিন মায়েরে জানতে পারেন, অ্যান্ডি তাঁকে একটি বই উপহার দিয়েছেন, যেটির নাম ‘হোয়্যার দ্য ওয়াইল্ড থিংস আর’। বইটি ছিল মায়েরের ছোটবেলার প্রিয় একটি বই।

বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার পরে, অ্যান্ডি মায়েরে’কে জানান যে তিনি তাঁকে ভালোবাসেন। এরপর তাঁরা ডেটিং শুরু করেন এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে।

অবশেষে, অ্যান্ডি মায়েরে’কে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডে তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। এরপর কেটে গেছে বহু বছর। মায়েরে এবং অ্যান্ডি বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছেন। তাঁদের দুটি মেয়ে রয়েছে।

এই দম্পতির ভালোবাসার গভীরতা আজও অটুট। তাঁদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হল গভীর বন্ধুত্ব এবং একে অপরের প্রতি সম্মান।

তাঁরা বিশ্বাস করেন, জীবনের পথচলায় একে অপরের প্রতি সমর্থন ও ভালোবাসাই আসল।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *