বিদেশ থেকে ফিরতেই এই মহিলার ৮০০ ডলার জরিমানা! কেন জানেন?

বিমানবন্দরে আপেল: সামান্য ভুলের কারণে বড় ক্ষতির সম্মুখীন এক যাত্রী।

বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকালে খাদ্যদ্রব্য ঘোষণা না করার ফল যে কত ভয়াবহ হতে পারে, সম্প্রতি তারই প্রমাণ পাওয়া গেছে। নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরছিলেন এক যাত্রী।

বিমানে খাবার সময় সঙ্গে নেওয়া একটি আপেল ঘোষণা করতে ভুলে যাওয়ায় প্রায় ৮০০ ডলার জরিমানা এবং ‘গ্লোবাল এন্ট্রি’ প্রোগ্রাম থেকে বাদ পড়ার ঝুঁকিতে পড়েন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা টিকটকে শেয়ার করেছেন ‘ডিসকভারিং উইথ দিনা’ নামের এক ব্যবহারকারী। তিনি জানান, বিমানবন্দরের কাস্টমস ও বর্ডার পেট্রোলের এক কর্মকর্তা তার কাছে এসে জানতে চান, ব্যাগে কোনো খাবার আছে কিনা।

কারণ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি কুকুর তার ব্যাগ শুঁকছিল। ওই কর্মকর্তা দিনাকে জানান, আপেলটি ঘোষণা না করার কারণে তার ৫০০ ডলার জরিমানা হতে পারে এবং ‘গ্লোবাল এন্ট্রি’র সুবিধা বাতিল করা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় খাদ্য, উদ্ভিদ বা প্রাণী সংক্রান্ত কোনো পণ্য সঙ্গে থাকলে তা ঘোষণা করা বাধ্যতামূলক। কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, সব ধরনের কৃষি পণ্য ঘোষণা করতে হয় এবং কাস্টমসের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সেগুলোর পরীক্ষা করেন।

ফল, সবজি, বীজ, মাটি, মাংস এবং পশুপাখি বা উদ্ভিদ থেকে তৈরি কোনো পণ্য—এগুলো সব এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।

দিনা জানান, আপেলটি ঘোষণা না করার কারণে তিনি যদি মিথ্যা কথা বলতেন, তাহলে তার ৩০০ ডলার জরিমানা হতো। এছাড়া আপেল সঙ্গে রাখার জন্য আরও ৫০০ ডলার জরিমানা হতে পারত।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৮০০ ডলারের বেশি মূল্যের কোনো জিনিস কিনলে, ১০,০০০ ডলারের বেশি নগদ অর্থ (ভ্রমণকারীর চেকসহ) এবং খাদ্য, উদ্ভিদ ও প্রাণী সংক্রান্ত কোনো পণ্য থাকলে তা ঘোষণা করতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ওয়েবসাইটে (aphis.usda.gov) নিষিদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত পণ্যের তালিকা দেওয়া আছে। এখানে ভ্রমণকারীদের জন্য বিভিন্ন নির্দেশিকাও রয়েছে, যা তারা কোন দেশ থেকে আসছেন তার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

ইউএসডিএ’র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কৃষি পণ্যগুলোর মূল দেশ প্রমাণ করার জন্য রশিদ এবং প্যাকেজিং সঙ্গে রাখা ভালো। তবে সব কৃষি পণ্য কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে ঘোষণা করলে, কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

এমনকি পরিদর্শকরা যদি মনে করেন, কোনো পণ্য দেশে প্রবেশ করার উপযুক্ত নয়, তাহলেও কোনো জরিমানা করা হয় না।

দিনার ক্ষেত্রে সৌভাগ্যবশত প্রথম ভুলের কারণে তাকে শুধু সতর্ক করা হয়। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য তিনি অন্যদের সতর্ক করেছেন।

তিনি জানান, বিমানে এখন আর ঘোষণা ফরম পূরণ করতে হয় না বলে তার আপেলটির কথা মনে ছিল না। এমনকি, প্রক্রিয়াজাত খাবারও যে ঘোষণা করতে হয়, সে সম্পর্কেও তিনি অবগত ছিলেন না।

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের সময় এই ধরনের নিয়মকানুন সম্পর্কে সচেতন থাকাটা জরুরি। এছাড়াও, অন্যান্য দেশেও এ ধরনের কাস্টমস সংক্রান্ত নিয়ম রয়েছে।

তাই, বিদেশ ভ্রমণের আগে সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়মাবলি ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *