ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর এই দ্বীপরাষ্ট্রের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা স্তর ৩ নির্ধারণ করেছে, যার অর্থ হলো, সেখানে ভ্রমণে যেতে পুনরায় বিবেচনা করার প্রয়োজন। সম্প্রতি সহিংস অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে হামলা, ছিনতাই এবং গুলির ঘটনা বেড়েছে। এমনকি, অপহরণের শিকার হচ্ছেন বিদেশি নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দারাও। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত বছরের ৩০শে ডিসেম্বর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়, যা চলতি বছরের ১৩ই জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বিশেষ করে, ত্রিনিদাদের রাজধানী পোর্ট অফ স্পেনে ভ্রমণকারীদের জন্য বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তাদের এই শহরের কিছু এলাকায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
ভ্রমণ বিষয়ক এই সতর্কতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ভ্রমণ সতর্কতা স্তর ৩ মানে হলো, সেখানে ভ্রমণের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা উচিত। এর আগে, স্তর ১ এবং ২-এ স্বাভাবিক সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হয়, যেখানে স্তর ৪-এ ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে, এই পরিস্থিতিতেও কিছু ক্রুজ কোম্পানি, যেমন – রয়েল ক্যারিবিয়ান এবং কার্নিভালের প্রিন্সেস ক্রুজ, তাদের ২০২৩ সালের পরিকল্পনা অনুযায়ী পোর্ট অফ স্পেনে যাত্রা বিরতি করবে। এক্ষেত্রে, পর্যটকদের ক্রুজ বন্দরের সুরক্ষিত এলাকায় থাকতে এবং শুধুমাত্র ক্রুজ লাইনের আয়োজিত ভ্রমণে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
যদি কোনো বাংলাদেশি পর্যটকের এই সময়ে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকে, তবে তাদের জন্য কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের স্মার্ট ট্র্যাভেলার এনরোলমেন্ট প্রোগ্রামে (STEP) নাম লেখানোর পরামর্শ দিয়েছে, যা জরুরি অবস্থায় দূতাবাস থেকে সতর্কতা বার্তা পাঠাতে এবং সাহায্য করতে সহায়ক হবে। এছাড়াও, ভ্রমণের আগে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন দেখে নেওয়া এবং ভ্রমণ বীমা করার কথাও বলা হয়েছে। রাতে একা ঘোরাঘুরি করা এবং নির্জন এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভ্রমণ সতর্কতা মূলত তাদের নাগরিকদের জন্য জারি করা হলেও, যেকোনো দেশের ভ্রমণকারীর জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নিরাপত্তা বিষয়ক এই তথ্য সবার জন্যই প্রযোজ্য। যেকোনো ধরনের ভ্রমণের আগে, সংশ্লিষ্ট দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর অনেকেই হয়তো সুন্দর এই দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোতে ভ্রমণে যেতে চাইবেন, তাদের জন্য এই সতর্কতাগুলো জানা জরুরি।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার