মহাসাগরে ত্রাস! ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল: আবহাওয়ার বড় খবরে তোলপাড়!

আটলান্টিক মহাসাগরে একটি নতুন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যা আবহাওয়াবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। এই ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে ‘গ্যাব্রিয়েল’ নামক একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে আটলান্টিকে কোনো ঝড় না থাকার বিরল ঘটনার অবসান ঘটাবে।

বর্তমানে, এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপটি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের উত্তরাংশের কাছাকাছি, যা প্রায় ১,৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। বুধবার সকালের দিকে এর বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৫৬ কিলোমিটার।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটি শীঘ্রই একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হবে, যার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে। এর পরে, সিস্টেমটি আরও শক্তিশালী হয়ে সপ্তাহান্তে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, এই ঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে, এর গতিপথের পরিবর্তনের দিকে নজর রাখতে হবে।

পূর্বাভাসের উপর নির্ভর করে, এটি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের পূর্বাঞ্চলে, বিশেষ করে পুয়ের্তো রিকো এবং ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে, শক্তিশালী ঢেউ এবং বিপজ্জনক স্রোত তৈরি করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির হারিকেন বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণা বিজ্ঞানী ড. ফিল ক্লটজবাখের মতে, ১৯৫০ সালের পর এই প্রথম আটলান্টিক মহাসাগরে ২৯শে আগস্ট থেকে ১৬ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো ঝড় দেখা যায়নি। এর আগে ১৯৯২ সালে হারিকেন অ্যান্ড্রুর পর এমনটা ঘটেছিল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই ঝড়ের পেছনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা একটি বড় কারণ। সাধারণত, আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা বাড়ে।

এই সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য উপযুক্ত থাকে।

আফ্রিকা থেকে আসা আরও একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপের পেছনে সৃষ্টি হচ্ছে এবং এটিও ধীরে ধীরে আরেকটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার বলছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এর স্থলভাগে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত প্রতি বছর ৩রা সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সময়ের মধ্যে সপ্তম গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় সৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার কিছুটা দেরিতে হলেও, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়লে বা এর গতিপথ পরিবর্তন হলে, তা আমাদের জন্য স্বস্তির কারণ হবে।

তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে, তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *