ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, কাতার রাজপরিবার থেকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ জাম্বো জেট উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। খবরটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই বিমানটি নতুন ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ হিসেবে ব্যবহৃত হবে, যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বিমান।
জানা গেছে, ট্রাম্প ইতোমধ্যেই তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ পোস্টে এই পরিকল্পনার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিমানটিকে “উপহার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এটিকে “বিনামূল্যে” পাওয়া যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প একে একটি “খুবই স্বচ্ছ এবং প্রকাশ্য লেনদেন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমানের ৪০ বছর পুরোনো এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানের পরিবর্তে এই নতুন বিমানটি ব্যবহার করা হবে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এবিসি নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বিদেশি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত যেকোনো উপহার অবশ্যই সকল প্রযোজ্য আইন মেনেই গ্রহণ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে, এই ঘটনা প্রকাশের পর ডেমোক্রেট দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, কোনো বিদেশি শক্তির কাছ থেকে এমন বিলাসবহুল উপহার গ্রহণ করা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
মার্কিন সিনেটর চাক শুমার এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, “কাতার কর্তৃক সরবরাহ করা এয়ার ফোর্স ওয়ান-এর মাধ্যমে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’-এর ধারণা প্রকাশ করা হচ্ছে। এটা শুধু ঘুষ নয়, বরং অতিরিক্ত সুবিধা সহকারে বিদেশি প্রভাব বিস্তারের একটি কৌশল।”
সাবেক হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি অ্যারি ফ্লেইশারও এক্সে তার উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “বিদেশি সরকারের কাছ থেকে এয়ার ফোর্স ওয়ান গ্রহণ করা কোনোভাবেই সঠিক নয়। এটি হয়তো আইনসম্মত, কিন্তু আমি এটা করতাম না।
এয়ার ফোর্স ওয়ান সম্পূর্ণরূপে আমেরিকার হওয়া উচিত। এটা কোনো বিদেশি শক্তির হাত ধরে যাওয়া উচিত নয় এবং কোনো রাজার কাছ থেকে উপহার হিসেবেও আসা উচিত নয়। এটা করা উচিত নয়।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক মহলে এর প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন একটি উপহার গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল