ট্রাম্পের গুরুতর অভিযোগ, ওবামার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে তিনি এই অভিযোগ করেন। ট্রাম্পের দাবি, ওবামা এবং তার প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
শুক্রবার (গত সপ্তাহে) দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক (Director of National Intelligence), টুলসি গাববার্ড কিছু নথি প্রকাশ করেন। ট্রাম্পের মতে, এই নথিগুলো ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক’ আচরণের প্রমাণ। যদিও ওবামার দপ্তর থেকে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সাবেক প্রেসিডেন্টের অফিসের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা সাধারণত হোয়াইট হাউজের এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের জবাব দিই না। তবে, এবারকার অভিযোগগুলো এতটাই গুরুতর যে এর প্রতিবাদ জানানো জরুরি।
ট্রাম্পের অভিযোগের মূল ভিত্তি হলো, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি। তিনি দাবি করেন, ওবামাই ছিলেন এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা। তার সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, এফবিআই প্রধান জেমস কোমি, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
ট্রাম্প মঙ্গলবার (গত সপ্তাহে) ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে এক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন। এসময় তিনি বলেন, “ওবামা এই ষড়যন্ত্রের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তার সঙ্গে হিলারি ক্লিনটনও জড়িত ছিলেন।” ট্রাম্পের মতে, হিলারি ক্লিনটন ক্রিস্টোফার স্টিলের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করতে ১ কোটি ২০ লক্ষ ডলার খরচ করেছিলেন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই নির্বাচনের আগে ওবামার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তবে, নির্বাচনের ফলাফলে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সিনেটের তদন্তেও এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। ওবামার দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাশিয়া যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিল, তা সবাই জানে। তবে, তারা ভোটের ফলাফল পাল্টাতে পেরেছিল এমন কোনো প্রমাণ নেই।”
ট্রাম্পের এই অভিযোগের বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা মনে করেন, ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার পরাজয়ের সম্ভবনা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এমন মন্তব্য করছেন।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে আনা স্টিল ডossier-এর বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এই ডossier-এ রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও পরে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন