যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাব ভেস্তে দিচ্ছেন জেলেনস্কি? বিস্ফোরক অভিযোগ ট্রাম্পের

ট্রাম্প: ইউক্রেনের শান্তি আলোচনা ভেস্তে দিতে পারেন জেলেনস্কি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অভিযুক্ত করেছেন, যিনি কিনা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি সম্ভাব্য শান্তি আলোচনাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, জেলেনস্কির কারণে শান্তি চুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে।

ট্রাম্পের মতে, ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল। তিনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ছিল। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে এবং এর বিরুদ্ধে ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে।

তবে, জেলেনস্কি রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া ছাড়তে রাজি নন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন কখনোই ক্রিমিয়ার রাশিয়ার দখলকে স্বীকৃতি দেবে না। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী, এটি সম্ভব নয়।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “ক্রিমিয়া বহু বছর আগেই হাতছাড়া হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিষয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।” ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি শান্তি আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের ধারণা, রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত এবং জেলেনস্কির কারণে তা আটকে আছে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ইউক্রেন নিয়ে একটি শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুপস্থিতির কারণে এর গুরুত্ব কমে যায়। সম্মেলনে মূলত যুদ্ধ বন্ধের উপায় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।

যুদ্ধ পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত। রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত দুইজন নিহত এবং ৫৪ জন আহত হয়েছে। এছাড়া, মারহানেটস শহরে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছে।

ইউক্রেন যদিও তার ভূখণ্ডের প্রায় এক পঞ্চমাংশ রাশিয়ার দখলে মেনে নিতে প্রস্তুত, তবে ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার আনুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে তারা নারাজ। ইউক্রেন মনে করে, আলোচনার মাধ্যমে তারা তাদের হারানো ভূমি পুনরুদ্ধার করতে পারবে।

এই শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে সম্ভবত ন্যাটোতে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ৩০টি দেশের একটি জোট ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দিতে পারে। তবে, রাশিয়া এখনো পর্যন্ত এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইউরোপীয় শান্তি রক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি চায় না। শান্তি আলোচনা এখনো অনেক দূর যেতে হবে বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *