ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কি আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে? এমন গুরুতর অভিযোগের মুখে পড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতের রায় অমান্য করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে।
আদালত সূত্রে খবর, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভেনেজুয়েলার কিছু নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, অভিযুক্তদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, সেই নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার জেরে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে।
বিচারক বোয়াসবার্গ মনে করেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করা হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে জবাবদিহি করার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অর্থ কী? যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে, তবে তাকে আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই অবমাননা দুই ধরনের হতে পারে: দেওয়ানি এবং ফৌজদারি। দেওয়ানি অবমাননায়, কোনো ব্যক্তি আদালতের আদেশ পালন করতে ব্যর্থ হলে অথবা আদালতের কাজে বাধা সৃষ্টি করলে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। অন্যদিকে, ফৌজদারি অবমাননায়, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আদালত অবমাননার ক্ষেত্রে সাধারণত অভিযুক্তকে জরিমানা অথবা কারাদণ্ডের মতো শাস্তি দেওয়া হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, অভিযুক্তকে উভয় দণ্ডেও দণ্ডিত করা যেতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা নতুন নয়, যেখানে কোনো প্রেসিডেন্ট আদালতের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। অতীতেও এমন নজির রয়েছে, যখন কোনো প্রেসিডেন্ট আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছেন অথবা সরাসরি অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করেছেন।
উদাহরণস্বরূপ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন গৃহযুদ্ধের সময় কিছু বন্দীকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছিলেন। আবার, প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান গুপ্তচরদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে যদি আদালত মনে করে যে ট্রাম্প প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা