বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) মাত্রা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় এবং নিচু অঞ্চলের দেশগুলোতে এর বিরূপ প্রভাব আরও তীব্র হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) -এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৩.৭৫ পার্টস পার মিলিয়ন (ppm) বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
এর আগে ২০১৫ সালে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ২.৯৬ পিপিএম বেড়েছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্র এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শিল্প বিপ্লবের আগে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৮০ পিপিএম। ১৯৭৯ সালে যখন NOAA এই বিষয়ে পরিমাপ শুরু করে, তখন এর গড় পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৩৭ পিপিএম।
বর্তমানে বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরে কার্বন ডাই অক্সাইডের গড় ঘনত্ব দাঁড়িয়েছে ৪২২.৭ পিপিএম। এমন পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্বন ডাই অক্সাইডের এই বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তনের গতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে। এর ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘন ঘন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যাও বাড়বে।
বাংলাদেশের বিশাল উপকূলীয় অঞ্চল এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। কৃষিকাজ এবং মানুষের জীবনযাত্রার ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে জলবায়ু গবেষণা বিষয়ক তথ্য প্রকাশে এক ধরনের গোপনীয়তা বজায় রাখার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, গবেষণা সংস্থাগুলোর বাজেট কমানোরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কার্বন নিঃসরণ কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
তথ্য সূত্র: CNN