মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি ও ইনক্লুশন’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) বিষয়ক কার্যক্রমের ওপর কড়া নজরদারি করতে চলেছে দেশটির বিচার বিভাগ (Department of Justice – DOJ)। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এমন নীতি গ্রহণ করেছে, যেখানে এই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে এবং তাদের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
সোমবার বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘ফলস ক্লেইমস অ্যাক্ট’ (False Claims Act) ব্যবহার করে এই বিষয়গুলোর তদন্ত করবে। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হল, কোনো ফেডারেল ঠিকাদার বা সরকারি তহবিল গ্রহণকারী যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নাগরিক অধিকার আইন লঙ্ঘন করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
বিচার বিভাগের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল টড ব্ল্যাঞ্চে এক স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন, ইহুদিবিদ্বেষ এবং নারীদের খেলাধুলায় সমান সুযোগের মতো বিষয়গুলো এই আইনের আওতায় আসতে পারে। তিনি আরও বলেছেন জাতি বা বর্ণের ভিত্তিতে সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হলে তাকে বৈষম্য হিসেবে গণ্য করা হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে DEI বিষয়ক কার্যক্রম চলছে, তারা আর্থিক জরিমানার শিকার হতে পারে। এমনকি গুরুতর লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ফৌজদারি তদন্তও হতে পারে। উল্লেখ্য, ‘ফলস ক্লেইমস অ্যাক্ট’ গৃহযুদ্ধ সময় থেকে প্রচলিত একটি আইন।
এই আইনের মাধ্যমে সরকার প্রতারণার কারণে হওয়া ক্ষতির তিনগুণ পর্যন্ত অর্থ আদায় করতে পারে।
এই পদক্ষেপ মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে DEI বিষয়ক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে আনতে চান এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা তহবিল বন্ধ করার কথা ভাবছেন।
এরই মধ্যে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রশাসনকে নমনীয় করতে DEI বিষয়ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, কর্মীদের ছাঁটাই করেছে এবং ‘সমতা’ ও ‘জেন্ডার’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করাও বন্ধ করে দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি। তিনি বলেছেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় DEI নীতি অনুসরণ করবে, তাদের ফেডারেল তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হবে।
তিনি আরও জানান, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই তাদের ‘ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি ও ইনক্লুশন’ অফিসের নাম পরিবর্তন করে ‘অফিস অফ কমিউনিটি অ্যান্ড ক্যাম্পাস লাইফ’ রেখেছে। এছাড়াও, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পৃথকীকরণের অভিযোগ এড়াতে তারা বিশেষ গোষ্ঠীগুলোর অনুষ্ঠানও বাতিল করেছে।
জানা গেছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরকারের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়েও বিচার বিভাগ ‘ফলস ক্লেইমস অ্যাক্ট’-এর অধীনে তদন্ত শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন