যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিধা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি বর্তমানে এক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। একদিকে অভিবাসন কমানোর কঠোর পদক্ষেপ, অন্যদিকে অভিবাসী শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল শিল্পখাতগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভিবাসী শ্রমিকদের বিষয়ে নীতিনির্ধারণ করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনকে।
কৃষি ও নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। এই শ্রমিকদের বিতাড়িত করার ফলে শিল্পখাতগুলোতে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন একদিকে যেমন অভিবাসন কমানোর পক্ষে, তেমনিভাবে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতগুলোর শ্রমিক চাহিদা মেটানোরও চেষ্টা করছে। অভিবাসী শ্রমিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে এক্ষেত্রে সরকারের অভ্যন্তরে মতানৈক্য দেখা যাচ্ছে। অভিবাসন কঠোরপন্থীরা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য কোনো প্রকার ছাড় দিতে নারাজ।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকান কৃষক ও খামারিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাদের ব্যবসার স্বার্থে প্রয়োজনীয় শ্রমিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। তবে, একইসাথে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিবাসীদের বিতাড়ন এবং আশ্রয় প্রদানকারী শহরগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য আইনি সুযোগ তৈরি করতে সরকার বেশ কিছু বিকল্প নিয়ে ভাবছে। এর মধ্যে রয়েছে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং কিছু শ্রমিককে বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া। তবে, এই ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আইনি জটিলতা এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার সম্মুখীন হতে পারে প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অভিবাসী শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য। গোল্ডম্যান স্যাকসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৪ থেকে ৫ শতাংশ এবং কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও নির্মাণ শিল্পের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শ্রমিক অবৈধভাবে বসবাস করেন। বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে যদি বিতাড়িত করা হয়, তবে তা বিভিন্ন শিল্পে সাময়িক সংকট তৈরি করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প প্রশাসন উভয় সংকটে পড়েছে। একদিকে অভিবাসন কমানোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে, অন্যদিকে শিল্পখাতগুলোর স্বার্থও দেখতে হবে। বিষয়টি সমাধানে সরকার বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন