মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত ইউক্রেনে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রথম অনুমোদন দিতে যাচ্ছে, যা দেশটির সঙ্গে সম্পর্ককে আরও গভীর করতে পারে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে এমন পদক্ষেপ এই প্রথম।
ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত খনিজ চুক্তি এই সিদ্ধান্তের পথ খুলে দিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে “৫০ মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি” মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ও পরিষেবা রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে ইউক্রেন সামরিক সহায়তা আরও দ্রুত পেতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই খনিজ চুক্তিকে “সত্যিকার অর্থে সমান সুযোগ তৈরি করা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে ইউক্রেনে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরের পর কিয়েভ আশা করছে, দ্রুত অস্ত্র সরবরাহ শুরু হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এই চুক্তির ফলে অস্ত্র ক্রয়ের বিষয়ে আলোচনা শুরু করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদিও চুক্তিতে সরাসরি কোনো অস্ত্রের উল্লেখ নেই, তবে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে অস্ত্র কেনা সহজ হবে।
এই চুক্তির ফলে ইউক্রেন এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হবে এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সরঞ্জাম নির্বাচন করবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি তারা নিজস্ব ড্রোন তৈরি করতে পারে, তবে তারা তা নিজেরাই করবে। তবে, এমন কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে যা শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করে থাকে।
এই ঘটনার আগে, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে ১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার অনুমোদন দেয়। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেন সম্পর্কিত সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়।
এই চুক্তির বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এখনো পর্যন্ত তেমন জোরালোভাবে পাওয়া যায়নি। তবে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এই চুক্তিকে জেলেনস্কির জন্য একটি বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে এমন এক পরিস্থিতিতে ফেলেছেন যে এখন তাদের খনিজ সম্পদ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
এই চুক্তির ফলে ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর আন্তর্জাতিক প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান