ইয়েমেন হামলা: ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের গোপন চ্যাট ফাঁস, তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যেকার একটি গোপন আলোচনা ফাঁস হওয়ার জেরে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, একটি সুরক্ষিত মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে ইয়েমেনে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনার বিস্তারিত তথ্য বিনিময় হয়েছিল, যা সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এই ঘটনায় একদিকে যেমন তথ্য সুরক্ষার দুর্বলতা প্রকাশ্যে এসেছে, তেমনই সরকারি গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা একটি ‘সিগন্যাল’ চ্যাট গ্রুপে মিলিত হয়ে ইয়েমেনে সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এই আলোচনায় হামলার কৌশল, লক্ষ্যবস্তু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।

উদ্বেগের বিষয় হলো, এই গোপন আলোচনাগুলো এমন একটি অ্যাপের মাধ্যমে হয়েছে যা সুরক্ষিত হিসেবে পরিচিত, তবে এর দুর্বলতা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ে, যখন জানা যায়, এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পরে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটিকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং, তারা দাবি করেছেন, ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে গোপনীয় বা ‘শ্রেণীভুক্ত’ (classified) কোনো কিছুই ছিল না।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামরিক অপারেশনের বিস্তারিত তথ্য, তা গোপনীয় হোক বা না হোক, এভাবে প্রকাশ হয়ে যাওয়াটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

এই ঘটনার সূত্র ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তথ্য নিরাপত্তা এবং সরকারি গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলো জানতে চাইছে, কীভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একটি সুরক্ষিত প্ল্যাটফর্মে আদান-প্রদান করা হলো এবং কেনই বা এর নিরাপত্তা নিয়ে এত গাফিলতি ছিল।

তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবিও জানিয়েছে।

অন্যদিকে, পেন্টাগন (মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর) তাদের কর্মীদের ‘সিগন্যাল’ অ্যাপ ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কর্মীদের এই অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, কারণ এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে।

বিশেষ করে, হ্যাকিংয়ের (hacking) মাধ্যমে তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনাও তারা উল্লেখ করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন করে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। তথ্য ফাঁসের ঘটনা একদিকে যেমন ট্রাম্প প্রশাসনের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে, তেমনই সরকারের গোপনীয়তা রক্ষার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

ভবিষ্যতে, এই ধরনের ঘটনা এড়াতে সরকার তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *