যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে আলোচনা চলছে, যা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। কর হ্রাস এবং সরকারি ব্যয়ের কাটছাঁটের প্রস্তাবনা রয়েছে বিলটিতে। তবে কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় বিলটি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। খবরটি প্রকাশ করেছে সিএনএন।
জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় এই বিলের ওপর ভোটাভুটির আগে রিপাবলিকান দলের নেতারা ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, যারা বিলটির বিরোধিতা করছেন, তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হলো, মেডিকেয়ার সুবিধাভোগীদের জন্য কাজের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক সময়সীমা এগিয়ে আনা।
স্পিকার জনসন আরও জানান, রাজ্যগুলোর বিদ্যমান ব্যবস্থা নতুন আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এবং যাচাই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে তারা কাজ করছেন। সাউথ ক্যারোলাইনার প্রতিনিধি র্যালফ নরম্যানসহ কয়েকজন রিপাবলিকান এই বিলের বিরোধিতা করছেন। শুক্রবার ট্রাম্পের বড় ধরনের অভ্যন্তরীণ নীতি বিষয়ক বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া নরম্যান জানিয়েছেন, এই পরিবর্তনগুলো আনা হলে তিনি বিলটিকে সমর্থন করতে পারেন।
নরম্যানের মতে, সবুজ জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট বাতিলের সময়সীমা দ্রুত করাটাও জরুরি। তিনি আরও জানান, বিরোধিতাকারীদের দাবিগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে, অন্যথায় তারা বিলের বিপক্ষে ভোট দেবেন।
অন্যদিকে, প্রতিনিধি পরিষদের বাজেট কমিটির চেয়ারম্যান জোডি অ্যারিংটন রবিবার রাতের বৈঠকে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব দিতে পারেন বলে জানা গেছে। টেক্সাসের চিপ রয়, ওকলাহোমার জশ ব্রেচিন এবং জর্জিয়ার অ্যান্ড্রু ক্লাইডসহ আরও কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য বিলটি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন।
বিলে বিপুল পরিমাণ কর ছাড়ের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক বাহিনী এবং জাতীয় নিরাপত্তা খাতে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রয়েছে। এর জন্য ফেডারেল স্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রোগ্রামগুলোতে পরিবর্তন আনা হবে এবং জ্বালানি খাতে বরাদ্দ কমানো হতে পারে।
তবে, কট্টরপন্থীদের দাবি মেনে নিলে মধ্যপন্থী রিপাবলিকানদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, যারা ট্যাক্স ক্রেডিট বাতিল হলে তাদের এলাকার কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন, তারা বিরোধিতা করতে পারেন। এছাড়া, মেডিকেয়ার সুবিধা কমানোর বিষয়েও অনেকে উদ্বিগ্ন।
সিএনএন সূত্রে জানা গেছে, রিপাবলিকান নেতারা মনে করছেন, রবিবার বাজেট কমিটির বৈঠকে বিলটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভোট হতে পারে। এরপর চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে প্রতিনিধি পরিষদে এটি পাস করার চেষ্টা করা হবে। তবে, এই আলোচনাগুলোতে ট্রাম্প সরাসরি জড়িত ছিলেন না, তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা এতে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে, কিছু সংখ্যক প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য শীর্ষ আয়করদাতাদের ওপর করের হার বাড়ানোর প্রস্তাব করছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা স্থানীয় করের ওপর থেকে ক্যাপ তোলার খরচ মেটাতে চাইছেন। নিউ ইয়র্কের প্রতিনিধি নিক ল্যালাটা সিএনএনকে জানিয়েছেন, শীর্ষ করের হার ৩৯.৬ শতাংশে ফিরিয়ে আনা হলে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রাজস্ব পাওয়া যাবে।
এই বিলটি যদি পাস হয়, তবে এর কিছু প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়তে পারে। কারণ, এতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য এবং বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বিস্তারিত জানতে হলে বিলটি চূড়ান্তভাবে পাস হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			