আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই! এআই নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দ্রুত বিস্তার লাভ করছে, যা একদিকে যেমন উন্নত ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, তেমনই মানুষের কর্মসংস্থান নিয়ে তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ।

উন্নত বিশ্বে, বিশেষ করে আমেরিকায়, এই প্রযুক্তি কর্মসংস্থানের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক। কেউ কেউ একে উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে দেখছেন, আবার কারো কারো মতে, এর ফল হবে মারাত্মক—কাজ হারানোর সম্ভাবনা বাড়বে কয়েকগুণ।

সম্প্রতি, হোয়াইট হাউসের সাবেক এআই উপদেষ্টা ডেভিড স্যাকস এআই-এর কারণে ব্যাপক হারে কাজ হারানোর আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে প্রযুক্তি মানব শ্রমিকদের সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না, বরং এটি অর্থনীতির বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

তিনি মনে করেন, এআই-এর কারণে আমেরিকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। স্যাকস ‘ডুম কাল্ট’-এর সমালোচনা করে বলেছেন, এই গোষ্ঠী এআই-এর নেতিবাচক দিকগুলো বেশি দেখে এবং এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে খাটো করে।

অন্যদিকে, এআই নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন অ্যানথ্রপিক-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দারিও অ্যামোদি। তিনি মনে করেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এআই-এর কারণে বিভিন্ন স্তরের, বিশেষ করে নতুন কর্মীদের জন্য, বহু কাজ চলে যেতে পারে।

অ্যামোদি মনে করেন, মানুষ এআই-এর দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না। তিনি কর্মীদের নতুন দক্ষতা অর্জনের উপর জোর দেন এবং নীতিনির্ধারকদের এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা, পিউ রিসার্চ সেন্টার-এর সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, আগামী দুই দশকে এআই-এর কারণে কাজের সুযোগ কমবে। অর্ধেকের বেশি আমেরিকান এআই-এর কারণে চাকরি হারানোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন।

এই বিতর্কের মধ্যে, এআই প্রযুক্তি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। ডেভিড স্যাকস জানিয়েছেন, এআই-এর দৌড়ে চীন খুব বেশি পিছিয়ে নেই, বরং তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই উন্নয়নের ফলে কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমতে পারে, তবে নতুন সুযোগও তৈরি হবে। তাই, কর্মীদের নতুন দক্ষতা অর্জন এবং প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

একইসঙ্গে, নীতিনির্ধারকদের উপযুক্ত নীতিমালা তৈরি করতে হবে, যাতে এই পরিবর্তনের সুফল পাওয়া যায় এবং কর্মীদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এআই প্রযুক্তির উত্থান একটি বৈশ্বিক ঘটনা, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে, এআই কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির উপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখনই বিস্তারিত গবেষণা ও প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

কর্মীদের প্রশিক্ষণ, নতুন দক্ষতা অর্জন এবং উপযুক্ত নীতিমালার মাধ্যমে এই পরিবর্তনের মোকাবিলা করা যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *