আলকাট্রাজকে ফের জেল বানাতে চান ট্রাম্প! কিন্তু…

ট্রাম্পের ‘আলকাট্রাজ’ কারাগার পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা: বাস্তবতার থেকে দূরে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি ছিল, সান ফ্রান্সিসকোর উপকূলে অবস্থিত ‘আলকাট্রাজ ফেডারেল পেনিটেনশিয়ারি’ পুনরায় চালু করার প্রস্তাব।

এই ঘোষণার পরই শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কারণ, এক সময়ের কুখ্যাত এই কারাগারটি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

আলকাট্রাজ দ্বীপটি একসময় সামরিক দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরবর্তীতে এটিকে কারাগারে রূপান্তর করা হয় এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এটি ফেডারেল কারাগার হিসেবে পরিচিত ছিল।

কুখ্যাত গ্যাংস্টার আল কাপোন, হোয়াইটি বুলজার এবং মেশিন গান কেলির মতো দুর্ধর্ষ অপরাধীরাও এখানে বন্দী ছিলেন। কারাগারটি বন্ধ হওয়ার পর ১৯৭৬ সালে এটিকে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বর্তমানে এটি গোল্ডেন গেট ন্যাশনাল রিক্রিয়েশন এলাকার অংশ, যেখানে প্রতিদিন পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ট্যুর এবং প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর প্রায় ১৪ লক্ষ পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন।

তবে, আলকাট্রাজকে পুনরায় কারাগারে পরিণত করা এত সহজ হবে না। এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে কারাগারটিতে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের মতো মৌলিক সুবিধা নেই।

ফলে এটিকে পুনরায় চালু করতে হলে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন। এমনকি, এটিকে নতুন করে তৈরি করতে হতে পারে।

এছাড়াও, কারাগারটি পুনরায় চালু করা হলে এর পরিচালনা খরচ হবে অনেক বেশি। বিশ্লেষকদের ধারণা, অন্য যে কোনো সাধারণ কারাগারের তুলনায় আলকাট্রাজ পরিচালনা করতে তিনগুণ বেশি খরচ হবে।

শুধু তাই নয়, জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে আলকাট্রাজের বিশেষ আইনি সুরক্ষা রয়েছে। ফলে, এর কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন।

রাজনৈতিক বিরোধিতাও রয়েছে এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে। ক্যালিফোর্নিয়ার স্টেট সিনেটর স্কট উইনার, যিনি সান ফ্রান্সিসকোর প্রতিনিধিত্ব করেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘আইনের শাসনের প্রতি আঘাত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও বলেছেন, “আলকাট্রাজ প্রায় ষাট বছর আগে কারাগার হিসেবে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং পর্যটন কেন্দ্র।

প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবটি কোনো বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নয়।”

সব মিলিয়ে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা এখনো পর্যন্ত বাস্তবতার থেকে অনেক দূরে। যদি কেউ আলকাট্রাজ পরিদর্শনের পরিকল্পনা করেন, তাহলে টিকিট বুকিং করে রাখাই ভালো, কারণ এখানে টিকিট খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

দ্বীপটিতে যাওয়ার ফেরি, দিনের বেলা, রাতের বেলা অথবা বিশেষ ট্যুরের জন্য জনপ্রতি প্রায় $50 (মার্কিন ডলার) খরচ হয়।

আলকাট্রাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন এই ওয়েবসাইটে: www.nps.gov/alca।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *