ট্রাম্পের ‘শত্রু আইন’: অভিবাসী বিতাড়নে আদালতের কড়া বার্তা!

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিকে কেন্দ্র করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিতর্কিত একটি আইনের প্রয়োগ নিয়ে দেশটির আদালতগুলোতে চলছে আইনি লড়াই। বিশেষ করে, ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ নামের একটি পুরোনো আইনের অধীনে অভিবাসীদের বিতাড়িত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফেডারেল আদালতে বিচারকরা প্রশ্ন তুলেছেন।

এই আইনের প্রয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়েছেন অনেকে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে বাধা সৃষ্টি করেছে।

‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ মূলত একটি যুদ্ধকালীন আইন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যুদ্ধের সময় বিদেশি শত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

ট্রাম্প প্রশাসন এই আইনের মাধ্যমে, বিশেষ করে এল সালভাদর ফেরত পাঠানোর জন্য, কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিচারকরা বলছেন, এই আইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

বিশেষ করে, বিতাড়িত করার আগে অভিবাসীদের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, যা তাদের অধিকারের পরিপন্থী।

বিভিন্ন আদালতের বিচারকরা এই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন রায় দিয়েছেন।

পেনসিলভানিয়ার একটি ফেডারেল আদালতের বিচারক স্টেফানি হেইনস, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

তিনি অভিবাসীদের দ্রুত বিতাড়িত করার বিষয়ে সরকারের যুক্তি খতিয়ে দেখতে চান।

টেক্সাসের একজন বিচারক ফার্নান্দো রদ্রিগেজ জুনিয়রও একই ধরনের রায় দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না যে, কোন দেশের অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ।

এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, কলোরাডো এবং নিউ ইয়র্ক সিটির কিছু বিচারকও অভিবাসীদের বিতাড়নের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

এমনকি সুপ্রিম কোর্টও আপাতত এই আইনের প্রয়োগ স্থগিত করেছে।

তবে, এই মামলাগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।

বিভিন্ন আদালতের এই ভিন্ন ভিন্ন রায় এবং স্থগিতাদেশগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মামলাগুলো সুপ্রিম কোর্টে গেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

কারণ, এর মাধ্যমে অভিবাসীদের অধিকার, আইনি প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে।

যদি নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকে, তবে তা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

এই মুহূর্তে, এই মামলাগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান।

প্রতিটি মামলার রায় অভিবাসন নীতি এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে।

তাই, এই বিষয়গুলো কিভাবে চূড়ান্ত রূপ নেয়, সেদিকে সবার দৃষ্টি থাকবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *