যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বড় বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করতে পারেন, এমনটাই জানা যাচ্ছে। এই চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে, শুল্ক আরোপের পর এটি হবে প্রথম কোনো বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ এক পোস্টে এই চুক্তির আভাস দিয়ে বলেছেন, “একটি বড় ও খুবই সম্মানিত দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি হতে যাচ্ছে। আগামীকাল সকাল ১০টায় ওভাল অফিসে সংবাদ সম্মেলন। এটি এখনো অনেক আসার শুরু!”
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যেমন ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’, ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’, ‘পলিটিকো’ এবং ‘সিএনএন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন নির্দেশ করতে পারে। কারণ, শুল্ক নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা বিশ্ব অর্থনীতিকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইতিমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। তারা ২০২৫ সালের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ৩.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.৮ শতাংশ করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডে বাণিজ্য আলোচনার প্রথম দফা বৈঠক করতে রাজি হয়েছেন। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম এই দুই অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্য বিরোধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গত মাসে ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও, যুক্তরাজ্যকে সেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে, গত ৯ এপ্রিল থেকে যুক্তরাজ্যের পণ্য রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে প্রায় ৩১৪.৬ বিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪১ লাখ কোটি টাকা) মূল্যের পণ্য ও সেবার বাণিজ্য হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩.৯ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বছরে প্রায় ৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা) যোগ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্ক নিয়ে এমন আলোচনা ও সিদ্ধান্তের মধ্যে বাংলাদেশের জন্য সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দুটোই রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই গতিপ্রকৃতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কীভাবে প্রভাবিত করে, সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা