মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, যার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও।
একদিকে যখন বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে শুল্কের (টারिफ) বোঝা বাড়ছে, যা বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের কারণে অনেক আমেরিকান কোম্পানি তাদের আমদানি বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দর দিয়ে চীনে তৈরি হওয়া পণ্যের চালান অর্ধেক কমে গেছে, যার ফলস্বরূপ কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং বাজারে জিনিসপত্রের অভাব দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোনো বাণিজ্য চুক্তির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
বরং, বাণিজ্য আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং চীনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে কোনো ফোনালাপ হয়নি বলে জানা গেছে।
এমনকি, ট্রাম্প চলচ্চিত্র শিল্পের ওপরও ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।
বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পরিবর্তে ট্রাম্পের এই ‘নাটকীয়তা’ অনেককে হতাশ করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প সম্ভবত চুক্তি করার চেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে বেশি আগ্রহী।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও ট্রাম্পের বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আগ্রহের অভাব দেখা গেছে।
তিনি বরং বলেছেন, যেকোনো সময় তিনি কয়েক ডজন চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক সুবিধার বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান।
বাণিজ্য ঘাটতিও তুলনামূলকভাবে কম।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হলো, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা আমাদের দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য চুক্তিগুলোতে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে আমদানি-রপ্তানিতে সমস্যা হতে পারে, যা বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কের পরিবর্তনগুলো আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে, সেদিকে নজর রাখা দরকার।
একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক বাজারের এই অস্থিতিশীলতা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: সিএনএন