যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে, ঔষধ, কিচেন ক্যাবিনেট, আসবাবপত্র এবং ভারী ট্রাকের মতো পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ দেশটির অর্থনীতিতে নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, ঔষধের উপর ১০০ শতাংশ, কিচেন ক্যাবিনেট ও বাথরুমের সামগ্রীর উপর ৫০ শতাংশ, আসবাবপত্রের উপর ৩০ শতাংশ এবং ভারী ট্রাকের উপর ২৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক বসানো হবে।
তিনি তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে উল্লেখ করেছেন, এই শুল্কগুলি জাতীয় নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কারণে প্রয়োজন।
তবে, এই শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে ট্রাম্পের দেওয়া যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের কারণে বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে।
বিশেষ করে, ঔষধের দাম বাড়লে স্বাস্থ্যখাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়লে বাড়ি নির্মাণ খরচও বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যেই মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে এই শুল্ক বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সতর্ক করে বলেছেন, পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে এবং এর কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, এই শুল্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়বে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তবে অতীতে দেখা গেছে, শুল্ক আরোপের ফলে অনেক সময় ভোক্তাদের উপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিবর্তে তা কমে যায়।
এমনকি, অনেক কোম্পানিকে উৎপাদন খরচ কমাতে কর্মী ছাঁটাই করতেও দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর দেশটি প্রায় ২৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি করেছে।
ঔষধের দাম দ্বিগুণ হলে স্বাস্থ্যখাতে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং স্বাস্থ্য বীমার খরচও এতে বাড়বে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন ইঙ্গিত দেয়।
এর আগে, চীনসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।
যদিও ট্রাম্প ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের উপর সরাসরি কোনো প্রভাব পড়বে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে, বিশ্ববাজারে তার প্রভাব পড়তে পারে।
সেক্ষেত্রে, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস