যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সামরিক নিয়ন্ত্রণ: ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক বাহিনীকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দিয়েছিলেন। সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্দেশ্যে নেওয়া এই পদক্ষেপ ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।
শুক্রবার প্রকাশিত এক স্মারকলিপিতে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের কথা জানান, যা অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ ছিল।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সামরিক বাহিনী এখন থেকে সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
এর ফলে সেনারা ফেডারেল ভূমি, যেমন রুজভেল্ট রিজার্ভেশন-এর মতো স্থানে প্রবেশ করতে পারবে।
রুজভেল্ট রিজার্ভেশন হলো অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া এবং নিউ মেক্সিকো জুড়ে বিস্তৃত একটি ৬০ ফুটের ভূমিখণ্ড।
এই অঞ্চলে প্রবেশের পর অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীদের আটক করে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষমতা পাবে সেনাবাহিনী।
এই নির্দেশের ফলে সামরিক বাহিনী সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন কাজ করতে পারবে, যেমন— সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ এবং নজরদারি সরঞ্জাম স্থাপন।
তবে আদিবাসী সংরক্ষণ এলাকাগুলো এই সামরিক নিয়ন্ত্রণের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য ছিল অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা।
এর অংশ হিসেবে সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল।
অনেকেই মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেসামরিক আইন প্রয়োগের কাজে সরাসরি জড়িত হওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপকারী ‘পসে কমিট্যাটাস অ্যাক্ট’-এর লঙ্ঘন।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের কারণ হিসেবে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আসা মাদকদ্রব্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রে ফেনটানিল নামক মাদক পাচারের কথা বলা হয়।
যদিও সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ফেনটানিল ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি হলো মার্কিন নাগরিক।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (Department of Homeland Security – DHS) গত ফেব্রুয়ারীর ২৫ তারিখে একটি নতুন নিয়ম ঘোষণা করে।
এতে বলা হয়, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, তাদের ফেডারেল সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে হবে।
এই নিয়ম অমান্য করলে জরিমানা অথবা কারাদণ্ডের মতো শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
তাঁদের মতে, এটি সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের অধিকার খর্ব করবে এবং মানবিক সংকট আরও বাড়িয়ে তুলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান