আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আমদানি শুল্ক নিয়ে অ্যামাজনের একটি পদক্ষেপ ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। জানা গেছে, অ্যামাজন যদি তাদের ওয়েবসাইটে পণ্যের মূল্যের সঙ্গে শুল্কের পরিমাণ যুক্ত করে দেখানোর কথা বিবেচনা করে, তাহলে ট্রাম্প এতে ক্ষুব্ধ হন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের থেকে আসা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা পণ্যের উপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অ্যামাজন যদি এই শুল্কের কারণে পণ্যের দামে হওয়া পরিবর্তন সরাসরি গ্রাহকদের দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এর মাধ্যমে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব দৃশ্যমান হত।
খবর অনুযায়ী, বিষয়টি জানার পর ট্রাম্প অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। হোয়াইট হাউসের একাধিক কর্মকর্তার মতে, ট্রাম্প এই বিষয়ে “অত্যন্ত বিরক্ত” হয়েছিলেন। তবে, ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের জানান যে বেজোস দ্রুত সমস্যাটি সমাধান করেছেন এবং তিনি ভালো মানুষ।
এই ঘটনার পরে, হোয়াইট হাউসের তৎকালীন প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট অ্যামাজনের এই পদক্ষেপকে “শত্রুতামূলক ও রাজনৈতিক” আখ্যা দেন। বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুডনিকও একই সুরেম কথা বলেন এবং মন্তব্য করেন যে, কোনো কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে শুল্কের কারণে দাম পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরে, তবে তা একটি “শত্রুতামূলক” কাজ হবে।
যদিও অ্যামাজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের মূল ওয়েবসাইটে এমন কোনো পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করা হয়নি। তবে, তাদের একটি সহযোগী ওয়েবসাইটে কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক যুক্ত করার বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছিল, কিন্তু সেটিও কার্যকর করা হয়নি।
অন্যদিকে, মার্কিন সিনেটর চাক শুমার এই ধরনের পদক্ষেপকে সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, ভোক্তাদের জানা উচিত যে শুল্ক তাদের পকেটে কতটা প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে, অন্যান্য ই-কমার্স সাইট, যেমন – শেইন এবং তেমু, তাদের পণ্যের দামে শুল্কের কারণে পরিবর্তন এনেছে। তেমু তাদের ওয়েবসাইটে আমদানি চার্জও যুক্ত করেছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, হোয়াইট হাউস অ্যামাজনের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলে। এর আগে, অ্যামাজনের বিরুদ্ধে চীনের একটি সংস্থার সঙ্গে মিলে তাদের ওয়েবসাইটে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বক্তৃতা ও লেখা সেন্সর করার অভিযোগ উঠেছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলি মার্কিন-চীন বাণিজ্য সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে। শুল্ক নীতি এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত এই বিতর্ক বিশ্ব অর্থনীতি, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন