যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী রডনি স্কটের বিরুদ্ধে, অভিবাসী হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগটি করেছেন একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, যিনি বলছেন, ২০১০ সালে মেক্সিকো থেকে আসা এক ব্যক্তির মৃত্যুর পেছনে স্কটের হাত ছিল।
নিহত ব্যক্তি, আনাস্তাসিও হার্নান্দেজ রোহাসকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা মারধর ও টেইজার গান দিয়ে আঘাত করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি)-এর কমিশনার পদে স্কটের মনোনয়ন নিয়ে এরই মধ্যে সিনেটে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সিনেটের ফিনান্স কমিটি বুধবার তার মনোনয়ন বিবেচনা করবে।
এই শুনানির আগে, সিবিপির অভ্যন্তরীণ বিষয়ক অফিসের সাবেক ডেপুটি কমিশনার জেমস ওং, কমিটির শীর্ষ ডেমোক্রেটকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি সান দিয়েগোতে হার্নান্দেজ রোহাসের মৃত্যুর তদন্তের বিষয়ে স্কটের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
২০০৯ সালে হার্নান্দেজ রোহাসকে গ্রেপ্তার করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এরপর তাকে মারধর করা হয় এবং টেইজার গান দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়।
সে সময় স্কট সান দিয়েগোর একজন শীর্ষ সীমান্ত সুরক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন। ওং-এর মতে, এই পদে থাকার কারণে স্কট ‘ক্রিটিক্যাল ইনসিডেন্ট টিম’ (সিআইটি) দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন।
এই দলগুলো, যা সিবিপি ২০২২ সালে বিলুপ্ত করে দেয়, তাদের কাজ ছিল ‘বল প্রয়োগের ঘটনা’ তদন্ত করা এবং ‘সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা কমানো এবং তাদের ভাবমূর্তি রক্ষা করা’।
ওং আরও লিখেছেন, সিআইটি হার্নান্দেজ রোহাসের মেডিকেল রেকর্ড চেয়েছিল, সম্ভবত ‘তাদের নিজস্ব প্রচারের জন্য তথ্য সাজানোর উদ্দেশ্যে’। তিনি আরও বলেন, “এই উদ্দেশ্যে সিবিপির প্রশাসনিক সমন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি ছিল এবং যারা এতে স্বাক্ষর করেছেন, তাদের তা জানা উচিত ছিল।”
চিঠিতে ওং উল্লেখ করেন, “মি. স্কট, তার পদের কারণে, এই মামলার সিআইটি-র সমস্ত কার্যক্রম তদারকি করতেন এবং সিআইটি-র সমস্ত তথ্য তার মাধ্যমেই সিবিপি সদর দফতরে পৌঁছাতো। এটি কোনো তদন্ত ছিল না, বরং ছিল একটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রক্রিয়া – যা স্বয়ং মি. স্কট তত্ত্বাবধান করেছেন।
ক্ষমতার এই অপব্যবহার তাকে দেশের বৃহত্তম আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর একটির নেতৃত্ব দেওয়ার অযোগ্য করে তোলে।”
তবে, রডনি স্কট এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ডেমোক্রেট সিনেটর রন ওয়াইডেন হার্নান্দেজ রোহাস মামলার বিষয়ে স্কটের পদক্ষেপকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত রেকর্ড চেয়েছেন।
ওয়াইডেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়ামকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ, তার হাতে সিবিপির বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
অন্যদিকে, রিপাবলিকান সিনেটর জন করনিন স্কটকে ‘অসাধারণ পছন্দ’ বলে সমর্থন করেছেন। উল্লেখ্য, স্কট এর আগে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীতে কাজ করেছেন এবং অভিবাসন নীতি নিয়ে জো বাইডেনের নীতির সমালোচনা করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান