যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাংয়ের এক শীর্ষস্থানীয় সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত প্রথম মামলা রুজু করেছে। বুধবার (আজ) দেশটির কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, হোসে এনরিকে মার্তিনেজ ফ্লোরেস (২৪) নামের এই ব্যক্তি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটাতে অবস্থিত ট্রেন দে আরাগুয়া গ্যাংয়ের একজন প্রভাবশালী নেতা। তাকে গ্যাংয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘আভ্যন্তরীণ চক্রের’ সদস্য হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মাদক পাচারের উদ্দেশ্যে কোকেন সরবরাহ করার ক্ষেত্রেও ফ্লোরেস সহায়তা করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে অভিবাসন নীতি কঠোর করার অংশ হিসেবে এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। এর আগে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই গ্যাংটিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন।
জানা গেছে, ফ্লোরেস বর্তমানে কলম্বিয়ায় আটক আছেন। গত ৩১শে মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া একটি অস্থায়ী গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ৮ই এপ্রিল টেক্সাসের একটি ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরি তার বিরুদ্ধে অভিযোগনামা দাখিল করে। যদিও তাকে কবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ফ্লোরেসের বিরুদ্ধে একটি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া, সন্ত্রাসবাদে সহায়তা করার ষড়যন্ত্র এবং আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের ষড়যন্ত্র ও সরাসরি মাদক পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে ফ্লোরেসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এবং ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ১১৪ কোটি টাকার বেশি) জরিমানা হতে পারে।
ট্রেন দে আরাগুয়া গ্যাং মূলত ভেনেজুয়েলার একটি কারাগার থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ধীরে ধীরে এটি উত্তর ও দক্ষিণে তাদের জাল বিস্তার করে।
বর্তমানে তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে সক্রিয় রয়েছে। গ্যাংটি মানব পাচার, চাঁদাবাজি, অপহরণ, অর্থ পাচার এবং মাদক চোরাচালানের মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) বলছে, ট্রেন দে আরাগুয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং জনগণের জন্য সরাসরি হুমকি স্বরূপ। এই গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন