আতঙ্ক! ইয়েমেনে হামলার গোপন চ্যাটে সাংবাদিক, ট্রাম্প প্রশাসনের চাঞ্চল্যকর কাণ্ড!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন কর্মকর্তাদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যের একটি পদক্ষেপ, যেখানে অত্যন্ত গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য বিনিময় করার জন্য একটি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল। এই চ্যাট গ্রুপে, অপ্রত্যাশিতভাবে একজন সাংবাদিকও যুক্ত ছিলেন। খবরটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

জানা গেছে, হোয়াইট হাউজের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মাইক ওয়াল্টজ, অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই আলোচনা চলাকালে, আটলান্টিক ম্যাগাজিনের সম্পাদক-ইন-চিফ, জেফরি গোল্ডবার্গ, ভুলক্রমে এই চ্যাট গ্রুপে যুক্ত হন। এই ঘটনার জেরে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে, যা গুরুতর উদ্বেগের কারণ।

আলোচনাটি মূলত সংকেত আ্যপ্লিকেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। এই আ্যপ্লিকেশনটি সাধারণত গোপনীয়তা রক্ষার জন্য পরিচিত এবং সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে, সামরিক অভিযান সংক্রান্ত পরিকল্পনার জন্য এই ধরনের আ্যপ্লিকেশন ব্যবহার করা হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, সামরিক কার্যক্রমের পরিকল্পনার জন্য এই ধরনের আ্যপ্লিকেশন ব্যবহারের কোনো নজির নেই।

আটলান্টিক ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে প্রকাশ, ওই চ্যাটে ইয়েমেনে হামলার তারিখ, লক্ষ্যবস্তু এবং ব্যবহৃত অস্ত্রের বিবরণ সহ বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছিল। এমনকি, সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফও এমন কিছু তথ্য সরবরাহ করেছিলেন যা সম্ভবত গোপনীয়তা রক্ষার পরিপন্থী ছিল।

এই ঘটনার পর, সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের ভুল গুরুতর এবং এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এমনকি, কেউ কেউ এমনটাও মনে করেন যে, এই ধরনের ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গোপনীয়তা রক্ষা সংক্রান্ত আইন, বিশেষ করে ‘গোয়েন্দাগিরি আইন’ লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আইনে জাতীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত সংবেদনশীল তথ্যের অপব্যবহারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাধারণত, এমন ঘটনার তদন্তের জন্য ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং বিচার বিভাগের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগ সক্রিয় হয়।

তবে, এই ঘটনার ক্ষেত্রে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। ঘটনা প্রসঙ্গে ট্রাম্পের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি এর বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। একইসাথে, তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সুরক্ষিত মাধ্যম ব্যবহারের গুরুত্বও এখানে বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *