যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফেডারেল তহবিল কমানোর কথা বিবেচনা করছে। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে তারা মেয়েদের খেলাধুলায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণের বিষয়টিকে চিহ্নিত করেছে।
জানা গেছে, শিক্ষা সচিব লিন্ডা ম্যাকমোহন এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থাকে নতুনভাবে সাজানোর একটি অংশ। এর আগে, হার্ভার্ড ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল, বিশেষ করে ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে।
ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফেডারেল অনুদান কমানোর সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে টাইটেল IX-এর (Title IX) বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই আইনের অধীনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ম্যাকমোহন উল্লেখ করেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় মেয়েদের খেলাধুলায় পুরুষদের অংশগ্রহণের ঘটনা টাইটেল IX-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে। রাজ্যের আইন অনুযায়ী, সকল শিক্ষার্থীর খেলাধুলায় অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে, যা তাদের লিঙ্গ পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বিচার বিভাগের (Department of Justice – DOJ) বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন এ.বি. হার্নান্দেজ নামের একজন ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেট, যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি পাবলিক হাই স্কুলের ছাত্রী। তার খেলাধুলায় অংশগ্রহণের কারণে কিছু মানুষ আপত্তি জানালেও, রাজ্য সরকার তার অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ক্যালিফোর্নিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও, হার্ভার্ড ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষা সচিব ম্যাকমোহন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অ্যান্টি-সেমিটিজম মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এই সম্ভাব্য ফেডারেল তহবিল কমানোর ফলে ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা, বিশেষ করে জৈব প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম নিয়োগকর্তা।
শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, তারা ক্যালিফোর্নিয়াকে সতর্ক করেছে এবং তাদের তহবিল কমানোর ঝুঁকি রয়েছে। তবে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে চলবে, তাদের সরকারি তহবিল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন