গাড়ির দাম বাড়লে কিছু যায় আসে না! ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাঁর শুল্ক নীতির কারণে গাড়ির দাম বাড়লে তিনি তাতে পরোয়া করেন না। বরং তিনি চান, গাড়ির দাম বাড়ুক।

কারণ তাঁর ধারণা, এতে আমেরিকান গাড়ি কেনার প্রবণতা বাড়বে এবং উৎপাদনকারীরাও যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়তে উৎসাহিত হবে।

সম্প্রতি এনবিসি নিউজের ক্রিস্টেন ওয়েলকারের সঙ্গে এক ফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর তিনি কি গাড়ি প্রস্তুতকারকদের দাম কমাতে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন? জবাবে ট্রাম্প সরাসরি বলেন, “না, আমি এমন কথা বলিনি।

দাম বাড়লে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, মানুষ তখন আমেরিকান গাড়ি কেনা শুরু করবে।”

বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প নাকি অটোমোবাইল কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং শুল্কের কারণে গাড়ির দাম বাড়ালে তাঁদের ওপর আরও বেশি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

তবে ট্রাম্প শনিবার বলেছেন, তিনি চান তাঁর শুল্কের কারণে দাম বাড়ুক, যাতে করে গাড়ি প্রস্তুতকারকরা আমেরিকায় তাদের গাড়ি এবং যন্ত্রাংশ তৈরি করতে উৎসাহিত হয়। এর ফলে ক্রেতারাও আমেরিকান গাড়ি কিনতে আগ্রহী হবে।

ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে, “যদি তোমরা আমেরিকায় গাড়ি তৈরি করো, তাহলে অনেক লাভ করতে পারবে।

আর যদি তা না করো, তাহলে হয়তো আমেরিকায় আসতে হবে। কারণ, আমেরিকায় গাড়ি বানালে কোনো শুল্ক দিতে হবে না।”

তবে গাড়ি প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুন কারখানা তৈরি করা, কর্মী নিয়োগ করা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল (supply chain) সমন্বিত করা বেশ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

এছাড়াও, ট্রাম্পের ঘন ঘন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে তাঁরা দীর্ঘমেয়াদে তাঁর নীতির ওপর আস্থা রাখতে দ্বিধাগ্রস্ত।

শনিবার ট্রাম্প জানান, বিভিন্ন পণ্যের ওপর বিদেশি দেশগুলোর আমদানি শুল্কের সমান হারে তাঁর আসন্ন পারস্পরিক শুল্ক (reciprocal tariffs) স্থায়ী হবে।

তবে তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছেন।

ট্রাম্প বলেন, “অবশ্যই, এগুলো স্থায়ী হবে। গত ৪০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকাচ্ছে।”

পরে তিনি জানান, আলোচনা তখনই হতে পারে, যখন অন্য দেশগুলো ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু’ দিতে রাজি হবে।

কারণ, দেশগুলোর কাছে অনেক মূল্যবান জিনিস রয়েছে। অন্যথায়, আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের গাড়ি এবং যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া সব গাড়ির উৎপাদন খরচ বাড়বে।

এটি আমদানি করা গাড়ি এবং আমেরিকান কারখানায় তৈরি হওয়া গাড়ির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এমনকি প্রস্তুতকারকরা দাম না বাড়ালেও, সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যেকার অসামঞ্জস্যের কারণে গাড়ির দাম বাড়বে।

শুল্ক যদি স্বল্প সময়ের জন্য হয়, তাহলে প্রস্তুতকারকরা সম্ভবত গাড়ির উৎপাদন কমিয়ে দেবে।

এছাড়া, শুল্কের কারণে দাম বাড়লে কিছু সম্ভাব্য ক্রেতা গাড়ি কেনা থেকে বিরত থাকতে পারেন বলেও তাঁদের আশঙ্কা।

শুক্রবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ট্রাম্পকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কানাডা এর বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।

যা একটি বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। যদিও শনিবার ট্রাম্প জানান, তিনি এখনই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করবেন না, তবে এটি কার্যকর হওয়ার পর তিনি হয়তো একটি চুক্তির জন্য আলোচনা করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *