মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য রোষের ভয়ে তাঁর বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দ্বিধা বোধ করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই নীরবতার কারণে তারা একটি বিশাল সুযোগ হারাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের সময়কালে অনেক বড় বড় কোম্পানি হয় তাঁর নির্বাচনী তহবিলে মোটা অঙ্কের অনুদান দিয়েছে, না হয় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে নতুন করে বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাণিজ্য নীতি নিয়ে তারা কোনো রকম উচ্চবাচ্য করতে রাজি হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা এখন ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ নীতি অবলম্বন করছেন। তারা মনে করছেন, ট্রাম্পকে ঘাঁটালে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে।
তাই তারা পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই কৌশল যে সবসময় কাজে আসছে, তা নয়।
সম্প্রতি, আমাজন কর্তৃপক্ষের একটি পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আমাজন যদি পণ্যের সঙ্গে শুল্কের পরিমাণ যুক্ত করে দেখানোর পরিকল্পনা করে, তাহলে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষিপ্ত হতে পারে।
কারণ, শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়লে, তাতে ট্রাম্পের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ভয়ের কারণে অনেক কোম্পানিই তার নীতির বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলতে চাইছে না। তবে, এই মুহূর্তে ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্টার্ন স্কুল অফ বিজনেসের অধ্যাপক স্কট গ্যালাওয়ের মতে, ট্রাম্পের নীতিগুলো অনেক ব্যবসায়ীর কাছেই ‘বিপজ্জনক ও বোকামি’ বলে মনে হয়। তাই, যারা এই নীতির বিরোধিতা করবে, তারা দীর্ঘমেয়াদে সুনাম অর্জন করতে পারবে।
উদাহরণস্বরূপ, তিনি ‘নাইকি’র মতো একটি বড় ব্র্যান্ডের কথা উল্লেখ করেছেন, যারা খেলাধুলার মাধ্যমে আমেরিকান মূল্যবোধ তুলে ধরতে পারে।
বর্তমানে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন জরিপে তাঁর সমর্থনের হার ৪০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা হয়তো শুরুতে কঠিন হবে, কিন্তু এর মাধ্যমে বড় ব্র্যান্ডগুলো দীর্ঘমেয়াদে ভালো সুযোগ তৈরি করতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়ে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর।
বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব অনেক। উন্নত দেশগুলোর বাণিজ্য নীতিগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিতে এর প্রভাব অনেক বেশি। তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন হওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন