আতঙ্কে শীর্ষ ব্যবসায়ীরা! ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ালে কি সুযোগ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী কর্পোরেট প্রধান নির্বাহীরা (Chief Executive Officers – সিইও) প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য রোষানলে পড়ার ভয়ে মুখ খুলতে দ্বিধা বোধ করছেন। তাদের এই নীরবতা একদিকে যেমন স্বল্পমেয়াদী লাভের নিশ্চয়তা দিচ্ছে, তেমনি তারা হারাচ্ছেন বড় ধরনের সুযোগ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াটা এখন অনেক বেশি লাভজনক হতে পারে।

সম্প্রতি, একটি ঘটনা কর্পোরেট জগতের এই দ্বিধা-দ্বন্দ্বের চিত্র তুলে ধরেছে। জানা যায়, ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন তাদের পণ্যের ওপর শুল্কের (আমদানি কর) বিষয়টি যুক্ত করে গ্রাহকদের দেখানোর পরিকল্পনা করেছিল।

কিন্তু হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ‘বৈরী ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এরপর ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার আপত্তির কথা জানান।

যদিও অ্যামাজন পরে জানায় যে, এমন কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের প্রশাসন কর্পোরেট জগৎ থেকে ভিন্নমতকে কঠোরভাবে দমন করতে চাইছে। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখ খুললে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ, ট্রাম্প প্রতিশোধ পরায়ণ হতে পারেন এবং এর ফলস্বরূপ কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন ধরনের আইনি জটিলতা ও বাধার সম্মুখীন হতে হতে পারে।

তবে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্টার্ন স্কুল অফ বিজনেসের অধ্যাপক স্কট গ্যালাওয়ের মতে, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এখন নিম্নমুখী এবং তার ক্ষমতা আগের চেয়ে দুর্বল।

তাই, এখন তার নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে কোম্পানিগুলো দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হতে পারে। গ্যালাওয়ে উদাহরণ হিসেবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করেন, যারা ট্রাম্পের সময়ে মুক্ত বক্তৃতার ওপর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কোনো বড় ব্র্যান্ড যদি ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়, তাহলে তা ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি এবং বাজারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উদাহরণস্বরূপ, নাইকির মতো একটি কোম্পানি খেলাধুলার মাধ্যমে আমেরিকান মূল্যবোধ তুলে ধরে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।

যদিও ওয়াল স্ট্রিটের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করেছেন, তবে তারা সরাসরি তার নাম উল্লেখ করা এড়িয়ে গিয়েছেন।

বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের মালিক এই ব্যবসায়ীরা সম্ভবত তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তিত।

গ্যালাওয়ের মতে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সুযোগ হলো কোনো প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান ব্র্যান্ডের প্রধান নির্বাহীর।

তিনি মনে করেন, নাইকি, ওয়ালমার্ট অথবা অ্যাপলের মতো কোম্পানি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। যারা সবার আগে এই পথে হাঁটবে, তারাই সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *