আতঙ্কের অভিযান! শিকাগোতে ট্রাম্পের ‘বিশেষ পুলিশ’ প্রধানের আসল চেহারা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। সম্প্রতি, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের আমলে শিকাগোতে অভিবাসন বিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্ডার পেট্রোলের প্রধান, গ্রেগরি বোভিনো। তাঁর কঠোর কার্যক্রম এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

বোভিনো, যিনি বর্তমানে এল সেন্ট্রোর সেক্টরের প্রধান টহল এজেন্ট হিসেবে কর্মরত, শিকাগোতে অভিবাসন আইনের প্রয়োগের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে, সীমান্ত সুরক্ষা কর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছেন, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে।

জানা গেছে, বোভিনোর দল পার্কিং লটে তল্লাশি চালানো, গাড়ির কাঁচ ভাঙা এবং বিক্ষোভকারীদের উপর রাসায়নিক দ্রব্য নিক্ষেপ করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি, গভীর রাতে একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

বোভিনোর এই ধরনের কার্যকলাপে স্থানীয় মেয়র এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিকাগোর মেয়র ব্রান্ডন জনসন এক নির্বাহী আদেশে শহরের অভ্যন্তরে অভিবাসন সংক্রান্ত অভিযান নিষিদ্ধ করেছেন।

তবে বোভিনো এই আদেশকে ‘দিবস্বপ্ন’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং তিনি আইন প্রয়োগে অবিচল থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, শিকাগোতে কোনো আশ্রয় নেই এবং অভিবাসন আইন কার্যকর করা হবে।

বোভিনোর কঠোর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন যে, এর মাধ্যমে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। তাঁদের মতে, কিছু ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির চেহারা বা আচরণের ওপর ভিত্তি করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

যদিও বোভিনো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, কর্মকর্তাদের কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়।

বোভিনোর কর্মজীবন প্রায় তিন দশক ধরে বিস্তৃত। তিনি ১৯৯৬ সালে বর্ডার পেট্রোলে যোগ দেন এবং ওয়াশিংটন, নিউ অরলিন্সসহ বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি হন্ডুরাস ও আফ্রিকাতেও কাজ করেছেন। ২০২০ সালে তিনি এল সেন্ট্রো সেক্টরের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।

বোভিনোর বিতর্কিত কার্যক্রমের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে। এমনকি, তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকিও এসেছে।

সম্প্রতি, জানা গেছে, একটি গ্যাং বোভিনোকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২,০০০ ডলার এবং হত্যা করতে পারলে ১০,০০০ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিকাগোতে বোভিনোর উপস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি কঠোরভাবে কার্যকর করার একটি উদাহরণ। তবে তাঁর এই কার্যক্রম কতটা সফল হবে, তা নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *