ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হ্রাসের ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে তেজি ভাব।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর কথা বলায় বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। একইসঙ্গে, তিনি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের পদ থেকে কাউকে সরানোর কোনো ইচ্ছা নেই বলেও জানান। এই খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে তিনি চীনের সঙ্গে “খুব ভালো” সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। তিনি আরও যোগ করেন, উভয় দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারলে শুল্ক “যথেষ্ট পরিমাণে” কমানো যেতে পারে, তবে তা “শূন্যের কোঠায়” নামবে না।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জেরে ওয়াল স্ট্রিটে নতুন করে তেজিভাব দেখা যায়। এস&পি ৫০০ এবং নাসডাকের মতো প্রধান সূচকগুলো দিনের শেষে আড়াই শতাংশের বেশি বৃদ্ধি দেখায়। এশিয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়ে, যেখানে জাপানের নিক্কেই সূচক প্রায় ২ শতাংশ এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ২.৪ শতাংশ বাড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচকও ১.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
বুধবার ইউরোপীয় বাজারেও এই তেজিভাব দেখা যায়। যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক ১.৬ শতাংশ এবং ইতালির এফটিএসই এমআইবি সূচক ১.১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। জার্মানির ড্যাক্স সূচক ২.৬ শতাংশ এবং ফ্রান্সের সিএসি সূচক ২.১ শতাংশ বাড়ে।
শেয়ার বাজারের এই উত্থানের পেছনে আরও একটি কারণ ছিল। ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরি পাওয়েলকে বরখাস্ত করবেন না। এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানকে “বড় পরাজিত” বলে মন্তব্য করায় শেয়ার বাজারে দরপতন হয়েছিল।
ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান সুদহার কমাতে রাজি না হওয়ায় ট্রাম্প এর আগেও বেশ কয়েকবার তার সমালোচনা করেছিলেন। এমনকি গত সপ্তাহে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি পাওয়েলকে সরিয়ে দিতে পারেন।
তবে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হন। এছাড়াও, চীন থেকে আমদানি শুল্ক কমানোর সম্ভাবনাও বাজারের জন্য ইতিবাচক ছিল।
ডলারের মূল্যও কিছুটা বেড়েছে। প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলার ০.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে, যেখানে ব্রেন্ট ক্রুড ব্যারেল প্রতি ৬৮ ডলারের উপরে উঠে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, শুল্ক কমলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব কমবে। ইরানের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস এবং অপরিশোধিত তেল পরিবহন ব্যবসায়ী সাইয়েদ আসাদুল্লাহ এমামজোমেহ-এর বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও তেলের দাম বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।
অন্যদিকে, অস্থির সময়ে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণের দাম কমেছে। মঙ্গলবার আউন্স প্রতি ৩,৫০০ ডলারে (প্রায় ৩,৮৫,০০০ টাকা) পৌঁছানোর পর বুধবার তা কমে ৩,৩0৭ ডলারে (প্রায় ৩,৬৩,৭৭০ টাকা) এসে দাঁড়ায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান