ট্রাম্পের চলচ্চিত্র শুল্ক প্রস্তাব: হলিউডের ভবিষ্যৎ নাকি রাজনৈতিক চাল?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। এবার তার নিশানায় হলিউড, বিশ্ব চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল কেন্দ্র।
ট্রাম্প প্রস্তাব করেছেন, বিদেশি দেশগুলোতে তৈরি হওয়া সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তার এই ঘোষণার পর চলচ্চিত্র জগৎজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
অনেকেই বিষয়টিকে এক প্রকারের রাজনৈতিক চাল হিসেবেও দেখছেন।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে জানা যায়, তিনি মনে করেন হলিউড নাকি বিদেশি সিনেমার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশগুলো যারা বিদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কর ছাড় দেয়, তাদের উপর তিনি ক্ষুব্ধ।
ট্রাম্পের মতে, এই শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্য হলো মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পকে রক্ষা করা।
কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চলচ্চিত্র নির্মাণ একটি জটিল ও বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত প্রক্রিয়া।
সিনেমা কোনো সাধারণ পণ্যের মতো নয়, যার ওপর সহজে শুল্ক বসানো যায়। টিকিট কিংবা নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন বা অ্যাপলের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের সাবস্ক্রিপশনের ওপর শুল্ক বসালে তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমাপ্রেমীদের ক্ষতি হতে পারে। কারণ, এর ফলে সিনেমার টিকিট ও স্ট্রিমিং সার্ভিসের খরচ বাড়তে পারে।
অনেকে মনে করেন, এর চেয়ে বরং সিনেমা হলগুলোতে দর্শক ফেরানোর জন্য অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের ফলে ইতোমধ্যে হলিউডে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কারণ, শুল্ক আরোপ হলে তাদের নির্মাণ খরচ বেড়ে যাবে। যদিও এই শুল্ক আদৌ কার্যকর হবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়, তবে এর প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য সম্ভবত মার্কিন গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খেপানো। কারণ, এমন একটি বিতর্কিত প্রস্তাবের মাধ্যমে তিনি আলোচনার কেন্দ্রে থাকতে চান।
তবে এর ফলস্বরূপ, মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোটকথা, ট্রাম্পের এই চলচ্চিত্র শুল্ক প্রস্তাব একদিকে যেমন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, তেমনি এর ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এখন দেখার বিষয়, এই প্রস্তাব কতদূর পর্যন্ত গড়ায় এবং এর ফলস্বরূপ চলচ্চিত্র জগতে কী ধরনের পরিবর্তন আসে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।