যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে আমদানি করা কম্পিউটার চিপের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর দাম বেড়ে যেতে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হল, কম্পিউটার চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করতে উৎসাহিত করা। হোয়াইট হাউসে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুকের সঙ্গে এক বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, “আমরা চিপ ও সেমিকন্ডাক্টরের উপর প্রায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। তবে, যদি আপনারা এটি আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করেন, তাহলে কোনো শুল্ক দিতে হবে না।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে, কারণ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো হয়তো এই শুল্কের কারণে খরচ বাড়াতে বাধ্য হবে। এর ফলে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে।
দেশের প্রযুক্তি বাজার এবং ভোক্তাদের উপর এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই ঘোষণার কয়েক মাস আগে ট্রাম্প প্রশাসন ইলেক্ট্রনিক পণ্যের উপর শুল্কের কিছু ছাড় দিয়েছিল।
তবে নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে, চীন এবং ভারতের মতো দেশ থেকে আসা চিপের উপর নির্ভরশীল কোম্পানিগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো হয়তো তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে বড় অংকের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
অ্যাপল এরই মধ্যে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির চেয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলার বেশি।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বিদেশি বিনিয়োগের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা এবং ভর্তুকি প্রদানের নীতি গ্রহণ করেছিলেন। বাইডেন সরকার ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করেন, যার মাধ্যমে নতুন চিপ কারখানা স্থাপন, গবেষণা এবং শ্রমিক প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল।
বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার চিপের চাহিদা বাড়ছে, এবং এর দামও বাড়ছে। বিশ্ব সেমিকন্ডাক্টর বাণিজ্য পরিসংখ্যান সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে চিপের বিক্রি ১৯.৬ শতাংশ বেড়েছে।
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে, চিপ শিল্পের ভবিষ্যৎ এবং এর বাজারের গতিপ্রকৃতিতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের বাজারে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দামের উপর নজর রাখা জরুরি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস