তৃতীয় মেয়াদের ইঙ্গিত! প্রেসিডেন্ট পদে ফিরতে চান ট্রাম্প?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত ২০২৯ সাল থেকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য হোয়াইট হাউসে ফিরতে চাইছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের নিয়ম ভেঙে কীভাবে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায়, সেই বিষয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প সরাসরি বলেন, “আমি মোটেই মজা করছি না।” তিনি আরও যোগ করেন, “এমন কিছু পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে।” যদিও তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি, তবে তার এই মন্তব্যের পরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ সর্বোচ্চ দুইবার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারেন না। এই নিয়ম ভেঙে ট্রাম্প যদি তৃতীয়বারের জন্য নির্বাচনে দাঁড়াতে চান, তবে তা হবে অত্যন্ত বিতর্কিত এবং সম্ভবত আইনি জটিলতা সৃষ্টি করবে।

ট্রাম্পের এই ইচ্ছার প্রতিক্রিয়ায় নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ড্যানিয়েল গোল্ডম্যান বলেছেন, “সরকারকে কুক্ষিগত করার এবং আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য এটি তার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টা।”

অন্যদিকে, ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননও তাকে ২০২৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। বোস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেরেমি পল বলেছেন, “তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করার মতো কোনো বিশ্বাসযোগ্য আইনি যুক্তি নেই।”

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে জর্জেট ডব্লিউ. ভান্স) প্রথমে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন এবং পরে ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন কিনা। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, “হ্যাঁ, এটি একটি উপায়। তবে আরও কিছু উপায় আছে।”

এই বিষয়ে জর্জেট ডব্লিউ. ভান্সের দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নির্বাচন আইন বিশেষজ্ঞ ডেরেক ম্যুলার মনে করেন, এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও ট্রাম্পের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ নেই। কারণ, সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী অনুযায়ী, যিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন, তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্যকে অনেকে ক্ষমতা ধরে রাখার একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন। নির্বাচনের আগে জনসমর্থন দেখানোর জন্য তিনি এমনটা করছেন বলেও অনেকে মনে করেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *