মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির কড়া সমালোচনা করে একটি নতুন জোট গঠিত হয়েছে, যার নাম ‘কস্ট কোয়ালিশন’। এই জোটের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ট্রাম্পের নীতিমালার কারণে কিভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, তা তুলে ধরা।
খবর অনুযায়ী, এই নীতির কারণে ভবিষ্যতে আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতেও, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
কস্ট কোয়ালিশন একটি দ্বিদলীয় উদ্যোগ, যেখানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের সমালোচকরা একত্রিত হয়েছেন। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং প্রস্তাবিত কর হ্রাসের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে আর্থিক চাপ বাড়বে।
জোটটি আসন্ন নির্বাচনগুলোতে তাদের বার্তা প্রচারে বিশেষভাবে সক্রিয় হবে এবং বিজ্ঞাপন, সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন আলোচনা সভার মাধ্যমে তাদের উদ্বেগের কথা জানাবে।
জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলো একদিকে যেমন পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে, তেমনি ব্যবসার ক্ষেত্রেও সৃষ্টি করছে নানা সমস্যা। তারা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্পের নীতিগুলি কেবল আমেরিকার অর্থনীতিকেই দুর্বল করবে না, বরং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
এই জোটের সঙ্গে যুক্ত আছেন রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশের মুখপাত্র টেরি হল্ট এবং প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস।
এছাড়াও, কামালা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিও এই জোটে কাজ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির উপর ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রভাব সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসছে। যদিও ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, জিনিসপত্রের দাম কমছে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে সরকারি তথ্য বলছে ভিন্ন কথা।
খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে এবং জ্বালানি তেলের দামও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। ফেডারেল রিজার্ভের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম তিন মাসে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৩.৬ শতাংশ, যা তাদের ২ শতাংশের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার অর্থনীতির এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দা হলে তা বাণিজ্য, রেমিটেন্স এবং বিদেশি বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের বাজারেও দেখা দিতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। উদাহরণস্বরূপ, যদি যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম কমে আসে, তবে এর প্রভাব হিসেবে বাংলাদেশেও হয়তো জ্বালানি তেলের দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
কস্ট কোয়ালিশন কিভাবে অর্থ সংগ্রহ করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে অনুদান সংগ্রহ করবে এবং তৃণমূল পর্যায় থেকেও অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই জোট একটি অলাভজনক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে এবং এর মাধ্যমে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।