মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়, বন্ধ হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ মাধ্যম!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক অর্থায়িত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (ইউএসএজিএম) নামক সরকারি সংস্থার অধীনে পরিচালিত হতো এমন বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। এর মধ্যে ভয়েস অফ আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি (আরএফই/আরএল), রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ) এবং ওপেন টেকনোলজি ফান্ড উল্লেখযোগ্য। এই সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তের ফলে সংবাদ পরিবেশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে এবং বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের খবর অথবা চীনের উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে এই মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। অনেক সময় এসব খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে তাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়া সরকার তাদের দেশে রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছিল।

সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাবেন। রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বে ফ্যাং বলেছেন, এই পদক্ষেপ স্বৈরাচারী সরকারগুলোকে পুরস্কৃত করার শামিল। তিনি বিশেষভাবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কথা উল্লেখ করেন, যারা তথ্য প্রবাহের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএজিএম-এর কার্যক্রম বন্ধের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, এই সংস্থাটি “ভিত্তিহীন অপপ্রচার” তৈরি করে। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংস্থাটিতে “অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপব্যবহার” চরম আকার ধারণ করেছে এবং এর পেছনে ট্যাক্সদাতাদের অর্থ খরচ করা উচিত নয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন সিদ্ধান্তের ফলে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে, যেসব দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত, সেখানকার মানুষের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমূর্তির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, এর ফলে স্বাধীন সাংবাদিকতা দুর্বল হবে এবং স্বৈরাচারী সরকারগুলো আরও শক্তিশালী হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *