মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত এড মার্টিনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ৬ই জানুয়ারীর ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত মামলাগুলোর প্রাক্তন পাঁচ প্রসিকিউটর, মার্টিনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ওয়াশিংটন ডিসি বার-এর শৃঙ্খলা বিষয়ক বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, মার্টিন ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে – ৬ই জানুয়ারীর দাঙ্গার সঙ্গে জড়িত মামলা খারিজ করা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নিশানা করা এবং একজন ফেডারেল প্রসিকিউটরের ভূমিকা সম্পর্কে ভুল ধারণা দেওয়া।
জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে হওয়া হামলার ঘটনা এখনো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই ঘটনার জেরে হওয়া বিভিন্ন মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এমন পাঁচ প্রাক্তন প্রসিকিউটর, বর্তমানে ডিসি-র শীর্ষ কৌঁসুলির পদে থাকা এড মার্টিনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।
তারা বলছেন, মার্টিন তার পদে আসার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে জানুয়ারীর ৬ তারিখের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিছু মামলা বাতিল করা। এছাড়াও, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সক্রিয় ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, মার্টিন এই পদে আসার পর প্রসিকিউটরদেরও বরখাস্ত করেছেন, যারা এই বিষয়ক তদন্তের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এমনকি, তিনি অফিসের অভ্যন্তরেও কিছু অনিয়মের খোঁজে তদন্ত শুরু করেন।
এই সমস্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করে, প্রাক্তন প্রসিকিউটররা ডিসি বার-এর শৃঙ্খলা বিষয়ক অফিসের কাছে একটি চিঠি জমা দিয়েছেন। চিঠিতে তারা মার্টিনের বিরুদ্ধে পেশাগত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “মার্টিন তার স্বল্প মেয়াদে একজন ফেডারেল প্রসিকিউটরের ভূমিকা সম্পর্কে মৌলিক ধারণা প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা করেছেন, যাদের তিনি আগে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাদের সহায়তা করেছেন এবং অন্যদের সঙ্গে অনুপযুক্তভাবে যোগাযোগ করেছেন।”
এই অভিযোগের সঙ্গে একমত পোষণ করে সমাজের বিশিষ্ট আইনজীবীরাও, যাদের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ফেডারেল বিচারক জে. মাইকেল লুটিগ, প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান বারবারা কমস্টক এবং আইনজীবী জর্জ কনওয়ে।
তারা সবাই মনে করেন, মার্টিনের এই ধরনের কার্যকলাপ বিচার বিভাগের সম্মানহানি করেছে এবং আইনের শাসনের প্রতি চরম আঘাত হেনেছে।
এড মার্টিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি নিজেকে এবং তার সহকর্মীদের ‘ট্রাম্পের আইনজীবী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যা থেকে স্পষ্ট হয়, তিনি তার পদে থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে, ডেমোক্র্যাট সিনেটররা মার্টিনের মনোনয়নের বিরোধিতা করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর অ্যাডাম শিফ, যিনি সিনেট বিচার বিভাগের সদস্য, তিনি বলেছেন, “এই ব্যক্তি অযোগ্য। তিনি তার পদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।”
মার্টিনের এই বিতর্কিত পদক্ষেপগুলো মার্কিন বিচার বিভাগের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমতাবস্থায়, ডিসি বার-এর শৃঙ্খলা বিষয়ক বোর্ডের দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন